ধনেখালি-কাণ্ডের সাক্ষী গ্রামছাড়া, অভিযুক্ত তৃণমূল

তিনি সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই ‘অপরাধে’ পুলিশ হেফাজতে ধনেখালির তৃণমূল নেতা কাজি নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর মামলার প্রধান সাক্ষী শেখ সাবির আলি ওরফে পল্টুকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তার দাবি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। ধনেখালির অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা পল্টু লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০২:৩৭
Share:

দুই ঘরছাড়া। (ডান দিকে) ধনেখালির খুনের ঘটনার প্রধান সাক্ষী শেখ সাবির আলি। পাশে কংগ্রেস কর্মী হবিবুর রহমান। ছবি: তাপস ঘোষ

তিনি সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই ‘অপরাধে’ পুলিশ হেফাজতে ধনেখালির তৃণমূল নেতা কাজি নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর মামলার প্রধান সাক্ষী শেখ সাবির আলি ওরফে পল্টুকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তার দাবি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

ধনেখালির অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা পল্টু লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলেন। একটি বুথে এজেন্টও হন। তারপর থেকেই তাঁকে এবং পরিবারের লোকজনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। গত ১৬ মে গণনার পরই গ্রাম ছাড়েন পল্টু। একই সঙ্গে গ্রামছাড়া হন হবিবুর রহমান এবং কাশেম মল্লিক নামে তাঁর প্রতিবেশী দুই কংগ্রেস কর্মীও।

পল্টুবাবু জানান, তাঁর পরিবার বিপন্ন। তাঁদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও নিরাপত্তা এবং প্রতিকার চাইতে যাবেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “বিধায়কের নির্দেশে তৃণমূলের ছেলেরা প্রতিদিন রাতে বোমা ফাটাচ্ছে বাড়ির সামনে। বাড়ির লোকেরা বাইরে যেতে পারছে না। এ ভাবে কেউ বাঁচতে পারে?”

Advertisement

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র। তাঁর দাবি, “কেউ ওই কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে বোমা ফাটায়নি। ভাঙচুরও করেনি। কংগ্রেস অযথাই অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। সম্ভবত ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই কোনও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।” সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

গত বছর জানুয়ারিতে পুলিশ হেফাজতে নাসিরুদ্দিনের মৃত্যু হয়। বিধায়ক অসীমাদেবীর অঙ্গুলি হেলনেই পুলিশ হেফাজতে ওই যুবককে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অসীমাদেবী প্রথম থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় হয়। রাজ্য সরকার সিআইডিকে তদন্তভার দেয়। সিআইডি ধনেখালি থানার চার পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করে। থানার তৎকালীন ওসিকেও দায়িত্ব থেকে সরানো হয়। এরপর কংগ্রেস সিবিআই তদন্ত চেয়ে আন্দোলন করে। কলকাতা হাইকোর্টে একই আবেদনে জনস্বার্থে মামলাও হয়। এরপরই হাইকোর্ট ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।

সিবিআই ধনেখালিতে ক্যাম্প করে ওই ঘটনার বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরা শুরু করে। কলকাতায় সিবিআই অফিসেও বিধায়ক অসীমাদেবী এবং তাঁর অনুগামী সৌমেন পাত্র ওরফে পটলাকেও জেরা করা হয়। সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষী দিয়েছিলেন পল্টুবাবুও। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল হুমকি দিচ্ছে, তোকেও নাসিরুদ্দিনের মতো করে মারব।” হুগলি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রীতম ঘোষ জানান, পুরো বিষয়টি এসপি কে জানিয়েছেন। এসপি সুনীল চৌধুরী অবশ্য বলেন, “ওই ঘটনা নিয়ে কেউ পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি। পুলিশকে অভিযোগ জানালে নিশ্চয়ই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement