নিখোঁজ জুটমিল শ্রমিকের স্ত্রীকে বকেয়া মেটানোর নির্দেশ কোর্টের

বেশ কিছু দিন আইনি লড়াই চালানোর পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভদ্রেশ্বরের গোন্দলপাড়া জুটমিলের এক নিখোঁজ শ্রমিকের বকেয়া পাওয়ার আশা দেখছেন তাঁর স্ত্রী। ওই ঘটনাকে মিলের অন্য শ্রমিকেরা তাঁদের ‘নৈতিক জয়’ হিসেবেই দেখছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০০
Share:

বেশ কিছু দিন আইনি লড়াই চালানোর পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভদ্রেশ্বরের গোন্দলপাড়া জুটমিলের এক নিখোঁজ শ্রমিকের বকেয়া পাওয়ার আশা দেখছেন তাঁর স্ত্রী। ওই ঘটনাকে মিলের অন্য শ্রমিকেরা তাঁদের ‘নৈতিক জয়’ হিসেবেই দেখছেন।

Advertisement

২০০০ সালের জুন মাসে ওই মিলের শ্রমিক শঙ্কর দাস নিখোঁজ হন। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি করা হয়। স্বামী ফিরে না আসায় আর্থিক সঙ্কটে পড়ে যান তাঁর স্ত্রী পার্বতীদেবী। বকেয়ার জন্য মিল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয় দাস পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই ভাবে তাঁদের আবেদনে কোনও সাড়া দেননি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত চন্দননগরের একটি আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সাহায্য নিয়ে পার্বতীদেবী গত বছর এপ্রিল মাসে কলকাতায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

পার্বতীদেবীর আবেদনের ভিত্তিতে আদালত নিখোঁজ শঙ্করবাবুর নামে একটি ঘোষণাপত্র দেয়। তার ভিত্তিতে প্রভিডেন্ড ফান্ড-সহ অন্যান্য নানা জায়গায় বকেয়ার জন্য আবেদন করা হয় দাস পরিবারের পক্ষ থেকে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে প্রভিডেন্ড ফান্ড দফতর পাবর্তীদেবীকে তাঁর স্বামীর প্রাপ্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দেয়। কিন্তু তাঁর একটি বিমার ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা মিল কর্তৃপক্ষ দিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। আদালত যাবতীয় কাগজপত্র দিলেও তা মানতে সংশ্লিষ্ট দফতর অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। তার ফলে, ওই শ্রমিকের পরিবার বকেয়া থেকে বঞ্চিত হয়।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন একটি নির্দেশে জানান, দ্রুত পার্বতীদেবীকে তাঁর স্বামীর বকেয়া সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে মিল কর্তৃপক্ষকে। যতদিন টাকা দিতে বিলম্ব করা হয়েছে সেই সময়কালের জন্য তাঁকে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত হারে সুদ দিতে হবে।

অবশ্য শুধু গোন্দলপাড়া জুটমিলই নয়, বর্তমানে রাজ্যের বেশ কিছু জুটমিলেও শ্রমিকেরা তাঁদের বকেয়া পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। আর্থিক সঙ্কটে জেরবার হচ্ছেন তাঁরা। চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেক সময় আমাদের কাছে শ্রমিকেরা আসছেন। কিন্তু কত জন শ্রমিককে আমরা এই জাতীয় আইনি সহায়তা দিতে পারছি? বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বহু শ্রমিক তাঁদের বকেয়া না পেয়ে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। কিন্তু তার কোনও রকম কোনও প্রতিকার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন