বন্ধ লগ্নি সংস্থার এজেন্টের দেহ নয়ানজুলিতে

দড়িতে হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় নয়ানজুলি থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্টের দেহ উদ্ধার ঘিরে সোমবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল মগরাহাটে। স্থানীয় বাঁকিপুর গ্রামের বাসিন্দা নিহত লালবাবু গাজি (২৮) এলাকায় কংগ্রেস সমর্থক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগে। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষমেশ পুলিশ দোষীদের ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মগরাহাট শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১৭
Share:

দড়িতে হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় নয়ানজুলি থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্টের দেহ উদ্ধার ঘিরে সোমবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল মগরাহাটে। স্থানীয় বাঁকিপুর গ্রামের বাসিন্দা নিহত লালবাবু গাজি (২৮) এলাকায় কংগ্রেস সমর্থক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগে। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষমেশ পুলিশ দোষীদের ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে আর্থিক লেনদেন নিয়ে গোলমালের কারণে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ওই যুবককে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই বেআইনি লগ্নি সংস্থার এক এজেন্ট-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লালবাবু ইদানীং জরির কাজ করে সংসার চালাতেন। গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থানীয় একটি লগ্নি সংস্থায় এজেন্টের কাজও করতেন। আমানতকারীদের থেকে টাকা নিয়ে তিনি জমা দিতেন ওই সংস্থারই উত্তর বিলন্দপুর গ্রামের এজেন্ট হাফিজ মিরের কাছে। সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পরে ওই লগ্নি সংস্থাটি বন্ধ হয়ে যায়। এ দিকে, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস থেকেই বেশ কয়েক জন আমানতকারীর আমানতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা লালবাবুর কাছে টাকার দাবি জানাতে থাকেন।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় হাফিজের কাছ থেকে টাকা আনতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন লালবাবু। আর ফেরেননি। সোমবার সকালে মগরাহাট কলেজের কাছের একটি নয়ানজুলিতে দেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। নিহতের ভাই দিলওয়ার হোসেন গাজি দেহটি শনাক্ত করেন। এর পরেই দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে দুপুর দেড়টা থেকে মগরাহাট বাজার মোড়ে উস্তি-দক্ষিণ বারাসত রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। লালবাবুর বাড়িতে যান জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অর্ণব রায়।

লালবাবুকে দলের ‘সক্রিয় কর্মী’ হিসেবে দাবি করে অর্ণববাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ভোটের আগে লালাবাবুকে খুন করল। তিনি এলাকায় আমাদের সংগঠনের কাজ করছিলেন।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মগরাহাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের খইরুল হক লস্কর। তাঁর দাবি, “খুনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। মনে হচ্ছে, টাকা লেনদেন নিয়ে কোনও গোলমালের জেরে খুন।”

নিহতের স্ত্রী নাজিরা বিবি অবশ্য বলেন, “স্বামী কংগ্রেসকে সমর্থন করলেও রাজনীতির সঙ্গে সে ভাবে কখনই যুক্ত ছিলেন না। দলের মিটিং-মিছিলে যেতেন না। আগের দিন হাফিজের কাছ থেকে আমানতকারীদের টাকা আনতে যান। মনে হচ্ছে, ও-ই চক্রান্ত করে স্বামীকে খুন করেছে।” নাজিরাই হাফিজ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। হাফিজের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর বাড়ি ছিল তালাবন্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন