বাসুলডাঙা

ভোটের মুখে রাস্তা সারানোর কাজ

ডায়মন্ড হারবার: দু’ধাপ অন্তর গর্ত। রিকশার ঝাঁকুনিতে যখন তখন হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ডায়মন্ড হারবারের বাসুলডাঙা-নেতরা রাস্তায়। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বাসুলডাঙা রেলগেট থেকে পঞ্চগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটারের দীর্ঘ এই রাস্তার সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এলাকার মানুষ। আর পূর্ত দফতরের ওই পিচ রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে এপ্রিলের গোড়ার দিকে, ভোট শুরুর ঠিক আগে।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০০:৪৯
Share:

ডায়মন্ড হারবার: দু’ধাপ অন্তর গর্ত। রিকশার ঝাঁকুনিতে যখন তখন হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ডায়মন্ড হারবারের বাসুলডাঙা-নেতরা রাস্তায়। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বাসুলডাঙা রেলগেট থেকে পঞ্চগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটারের দীর্ঘ এই রাস্তার সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এলাকার মানুষ। আর পূর্ত দফতরের ওই পিচ রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে এপ্রিলের গোড়ার দিকে, ভোট শুরুর ঠিক আগে। দক্ষিণ পঞ্চগ্রাম গ্রামসভার তৃণমূল সদস্য আনওয়ার লস্কর বলেন, ‘‘এত দিন এই রাস্তা সারাইয়ের জন্য তহবিল বরাদ্দ ছিল না। জেলাশাসকের বিশেষ অনুমোদনে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। কাজ শুরুও হয়েছে।’’

Advertisement

ওই রাস্তার উপর চাদা, কেষ্টরামপুর, জোঁকতবেলা, ন’পাড়া, পঞ্চগ্রাম, কবিরা, দহিরা, মইনান, বাসুুলডাঙা গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত চলে ভ্যান-রিকসা, মোটর-ভ্যান ও অটো। যান চলাচলের জন্য প্রায় সব সময়েই ধুলো ওড়ে রাস্তা দিয়ে। পঞ্চগ্রাম গাজিপাড়ার বাসিন্দা জায়র মোল্লার বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে যাতায়াত করাটাই আমাদের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। মাঝে মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটো-ভ্যানে দুর্ঘটনা হয়। রোগীকে এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, পঞ্চগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যদি কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়, তাহলেই বিপদ। এই খন্দপথ এড়িয়ে নেতরা হয়ে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার রাস্তা ঘুরলে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল। ওই পথটুকু যেতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।

রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হওয়ার পরে তার কৃতিত্ব নিতে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে দুই দলই। ২০১৩ থেকে বাসুলডাঙা পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে। পঞ্চায়েত প্রধান স্বপ্না হালদার বলেন, “আগে তো পঞ্চায়েত আমাদের হাতে ছিল না। তাই রাস্তা সারাই করতে পারিনি। তবে বারবার আর্জি জানিয়েছি। রাস্তার দু’পাশে গাছ ছিল। সেগুলিকেও কেটে নেওয়া হয়েছে।” অন্য দিকে, ডায়মন্ড হারবার ব্লকের ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্র্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভাপতি মনমোহিনী বিশ্বাসের দাবি, তাঁরাই রাস্তার জন্য তহবিল বরাদ্দ করার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি জানান, ১৫ এপ্রিল থেকে পাথর ফেলে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য তাঁঁদের। তাঁর কথায়, ‘‘বরাদ্দ ছিল না তা করলাম। জেলাশাসকের অনুমোদন করলাম। তার পরেও একটু সমীক্ষা বাকি ছিল। তা করতে সময় লেগেছে। তবে অনুমোদন এবং কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

কিন্তু ভোট ঘোষণা হওয়ার এত দিন পরে এভাবে রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু করা যায় কি? ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার সোমনাথ দে বলেন, “ভোটের সময়ে যে কোনও কাজ শুরু করতে হলে নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে সেই কাজ শুরুর অনুমোদন পেতে হবে। সেক্ষেত্রে এই রাস্তায় কী হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখব আমরা।” তবে মনমোহিনীদেবীর দাবি, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই কাজ শুরুর অনুমোদন পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন