ভোটকেন্দ্রে বিশ্রামকক্ষ, উপরি পাওনা গান-জল

বনগাঁর গাইঘাটা থানার শশাডাঙা এফপি স্কুল। স্কুলে ঢুকতেই দেখা গেল সুসজ্জিত তোরণে লেখা স্বাগতম। তোরণের দু’পাশে দুই মহিলার ছবি। নমস্কার জানিয়ে তাঁদের আহ্বান, ‘চলো ভোট দিই, দেশ গড়ি’। কোথাও লেখা ‘ভোট আপনার অধিকার, ভোট আপনার শক্তি’। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত ২৪৪ নম্বর মডেল পোলিং বুথ হিসাবেই সাজানো হয়েছিল এই স্কুলকে। এতদিনের পরিচিত বুথের ছবিটা স্কুলে ঢুকলে অন্যরকম ঠেকতে বাধ্য।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০০:৪৫
Share:

বুথ চত্বরে মহিলাদের বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা জায়গা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

বনগাঁর গাইঘাটা থানার শশাডাঙা এফপি স্কুল। স্কুলে ঢুকতেই দেখা গেল সুসজ্জিত তোরণে লেখা স্বাগতম। তোরণের দু’পাশে দুই মহিলার ছবি। নমস্কার জানিয়ে তাঁদের আহ্বান, ‘চলো ভোট দিই, দেশ গড়ি’। কোথাও লেখা ‘ভোট আপনার অধিকার, ভোট আপনার শক্তি’।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত ২৪৪ নম্বর মডেল পোলিং বুথ হিসাবেই সাজানো হয়েছিল এই স্কুলকে। এতদিনের পরিচিত বুথের ছবিটা স্কুলে ঢুকলে অন্যরকম ঠেকতে বাধ্য। মূল গেট দিয়ে ঢোকার পর রোদে ভোটারদের যাতে কষ্ট না হয় সে জন্য কাপড়ের ছাউনির ব্যবস্থা। রয়েছে পাখা, আলোর সুবন্দোবস্ত। এখানেই থামা নয়, ভোটাররা যাতে বিশ্রাম নিতে পারেন সে জন্য ছিল পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ। সেখানে আবার গান শোনার ব্যবস্থা। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মীনা বলেন, “ভোটারদের কথা চিন্তা করে এ বার জেলার প্রত্যেকটি মহকুমায় একটি করে মডেল পোলিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে।”

হেঁটে ভোটকেন্দ্রে আসার পর গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধা মায়া বৈদ্য। বিশ্রামকক্ষে বিশ্রাম নিয়ে খানিকটা সুস্থ হয়ে ভোট দেন। জানালেন, “আগেও রোদে তেতেপুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ভোট দিতে এসেছি। এমনটা দেখিনি। বেশ ভাল লাগল।” গরমে ভোটারদের গলা ভেজানোর জন্য ছিল পরিশ্রুত জলের ব্যবস্থা। বাঁদিকের একটি ঘরে মেডিক্যাল বুথেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ভোট দিতে এসে রোদে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন, তাই। তবে এদিন অনেকেই ওই মেডিক্যাল বুথ থেকে ওষুধ নিয়ে গিয়েছেন। মাথা ঘোরার ওষুধ থেকে শুরু করে বমি, পেট ব্যথা, ওআরএস এবং রক্তচাপের ওষুধও মিলেছে মেডিক্যাল বুথে।

Advertisement

বুথে ১১৪২ জন ভোটার। এত সুবিধা থাকায় দুপুর ১২ টার মধ্যেই ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে বলে জানান সেক্টর ইনর্চাজ বিশ্বজিৎ ঘোষ। বিকাশ সেন নামে এক বৃদ্ধ ভোট দিতে এসেছিলেন। ভোটের লাইনে ১৫ মিনিটে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে ১০ মিনিট বিশ্রাম কক্ষে বিশ্রাম নিয়ে তিনি বাড়ি যান। তাঁর কথায়, “এইরকম পরিবেশে ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে। এর আগে আমরা এইরকম পরিবেশ আগে কখনও পাইনি। এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

গাইঘাটার বিডিও পার্থ মণ্ডল বলেন, “ভোটারদের মধ্যে ভোটদানের আগ্রহ বাড়াতেই এই পরিষেবা। ভোটাররা যাতে আনন্দে ভোট দিতে পারেন তার জন্য এমন ব্যবস্থা।”

প্রতিবেশীদের মুখে শুনে এ দিন স্থানীয় বাউলডাঙ্গা, কাহনশিয়া ও সুটিয়া থেকে অনেকে এসেছিলেন নতুন ধরনের বুথ দেখতে। দেখে তাঁদের আক্ষেপ, এ বার হল না। পরের বার হয় তো এমনটা পাওয়া যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন