এই অবস্থা দিনের বেশির ভাগ সময়েই। নিজস্ব চিত্র।
যানজট এখনও পিছু ছাড়ল না উলুবেড়িয়াবাসীর। শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে ওটি রোড। রাস্তার দু’ধারে রয়েছে প্রশাসনিক বিভিন্ন দফতর। ফলে রোজকার প্রয়োজনে মানুষকে আসতে হচ্ছে উলুবেড়িয়া শহরে। তাঁদের পড়তে হচ্ছে যানজটের কবলে।
হাওড়া জেলার দু’টি মহকুমার মধ্যে উলুবেড়িয়া একটি। উলুবেড়িয়া মহকুমা শহর। এই শহরের মধ্যেই পড়ে আদালত, থানা, মহকুমাশাসকের কার্যালয়, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল প্রভৃতি। ফলে মানুষকে নানা প্রয়োজনে শহরে আসতেই হয়।
কেন এই যানজট?
শহরের মধ্যে চলাচল করছে কয়েকশো অটো রিকশা। অভিযোগ, এই সব অটোর রিকশার মধ্যে বেশিরভাগ বেআইনি। তারা যথেচ্ছ আইনও ভাঙে। ওটি রোডের ধারে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে নার্সিংহোম। এই সব নার্সিংহোমে গাড়ি রাখার নিজস্ব জায়গা নেই। ফলে নার্সিংহোমে যে সব রোগীরা আসেন তাদের গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্স থাকে রাস্তারই উপরে। স্টেশন রোডের মুখ থেকে গরুহাটার মোড় পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন দেখা যায় এই চিত্র। রাস্তার উপরে গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকার ফলে যানজট হয়।
স্টেশন রোডের মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ দেওয়া হলেও তা সন্ধ্যার পরে আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না। তখন পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয়। এই রাস্তার উপর দিয়েই শ্যামপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে অসংখ্য অটো রিকশা, ট্রেকার, বাস এবং গাড়ি। স্টেশন রোড থেকে গরুহাটা মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পার হতে গাড়িগুলিকে নাকাল হতে হয়। এ ছাড়া, উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত এবং মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে আসে বিভিন্ন গাড়ি, আমতা-উলুবেড়িয়া এবং উলুবেড়িয়া-উদয়নারায়ণপুর রুটের বাসও চলাচল করে এই রাস্তার উপর দিয়ে। যানজটে নাকাল হতে হয় তাদেরও। এ ছাড়া, এই সব এলাকায় রাস্তার দু’পাশে বসেন বহু হকার। রাস্তার দু’দিকে পড়ে থাকে ইট-বালি-পাথর। ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ীরাই এই সব ফেলে রাখেন। অভিযোগ, উলুবেড়িয়া পুরসভা এই সব অনিয়ম দেখেও দেখে না।
পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার কংগ্রেসের সাইদুর রহমান বলেন, “আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন একটি বাইপাস রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু আমাকে তৃণমূল সরিয়ে দেয়। তারা নিজেরাও এ ব্যাপারে কোনও পরিকল্পনা করেনি।” বর্তমান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের নাজিমা খান বলেন, “শহরের জনসংখ্যা বাড়ছে। যানজট তো হবেই। টাকার অভাবেই আমরা বাইপাস রাস্তা তৈরি করতে পারছি না।” অন্য দিকে পুলিশের বক্তব্য, যানজট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যতসংখ্যক পুলিশ দরকার তা নেই। ফলে সমস্যার মোকাবিলা মুশকিল হচ্ছে। সব মিলিয়ে যানজটের আশু সমাধানের আশ্বাসটুকুও দিতে পারছেন না কর্তারা।