বনগাঁর বাসিন্দা স্নিগ্ধা বাগচী সুন্দরবনের অমৃতনগর হাইস্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষিকা। ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে তাঁকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোনও ভাবেই সুরাহা না-হওয়ায় স্নিগ্ধাদেবী শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
বুধবার শুনানিতে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত প্রশ্ন তোলেন, এক জন শিক্ষিকাকে তাঁর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন? ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি, প্রধান শিক্ষক ও রাজ্যের স্কুলশিক্ষা কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন তিনি। ২৯ এপ্রিল কারণ জানাতে হবে তাঁদেরই। বুধবার থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষিকা যাতে কাজে যোগ দিতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করতে হবে।
অভিযোগ, স্কুল পরিচালন সমিতি শিক্ষিকাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল। হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, মামলা প্রত্যাহার না-করলে তাঁকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হবে এবং তা করাও হয়। বিচারপতি করগুপ্ত এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোনও প্রয়োজনে কেউ আদালতে আসতে পারবেন না, এটা আদালত বরদাস্ত করতে পারে না। তিনি বলেন, এ-সব কী হচ্ছে? এটা কোনও সভ্য সমাজের কাজ?
আবেদনকারীর আইনজীবী এক্রামুল বারি বলেন, ২০০৯ সালে স্নিগ্ধাদেবী ওই স্কুলে চাকরি পান। সরকারি ক্ষমতা বদলের পরে নতুন ম্যানেজিং কমিটি তৈরি হয়। তার পর থেকেই ওই শিক্ষিকাকে নানা ভাবে বিরক্ত করা হতে থাকে। ওই শিক্ষিকা আবেদনে জানান, নতুন কমিটির কিছু সদস্য শিক্ষিকাকে নানা ধরনের অশালীন প্রস্তাব দেয়। সন্ধ্যার পরে স্কুলে শিক্ষিকাদের আটকে রাখার জন্য কখনও অভিভাবক বৈঠক, কখনও স্কুলের উন্নয়নের বৈঠকও ডাকা হয়।
২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্কুলে মিটিং ডাকা হয়েছিল। সেখানে কিছু অশোভন প্রস্তাব দেওয়া হয় ওই শিক্ষিকাকে। তিনি তাতে রাজি হননি। প্রধান শিক্ষকের সামনে তাঁকে শারীরিক উৎপীড়ন করা হয় বলে অভিযোগ।