স্বরূপনগরে ধর্ষণের অভিযোগ দুই গরু পাচারকারীর বিরুদ্ধে

বিবাহিতা কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল স্বরূপনগরে। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় এলাকার দুই গরু পাচারকারীর বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে নির্যাতিতা। বছর সতেরোর ওই নির্যাতিতার বাপের বাড়ি স্বরূপনগরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

স্বরূপনগর ও গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:৫৭
Share:

বিবাহিতা কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল স্বরূপনগরে। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় এলাকার দুই গরু পাচারকারীর বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে নির্যাতিতা।

Advertisement

বছর সতেরোর ওই নির্যাতিতার বাপের বাড়ি স্বরূপনগরে। বছর দেড়েক আগে রানাঘাটে বিয়ে হয়েছিল মেয়েটির। স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন দুবাই। মেয়েটি বেশির ভাগ সময়ে থাকে বাপের বাড়িতেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বাপের বাড়ি থেকে বাজার করতে বেরিয়েছিল সে। সঙ্গে হাজার দু’য়েক টাকা ও মোবাইল ছিল। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে সে জানিয়েছে, গ্রামেরই দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল মণ্ডল ও বাহারুদ্দিন মোল্লা ওরফে (রিঙ্কু) তাকে রাস্তার পাশে একটি পোলট্রি খামারের পিছনে কলাবাগানে টেনে নিয়ে যায়। টাকা-মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। অচেতন মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীরা তাকে উদ্ধার করেন। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শাঁড়াপুল প্রাথমিক হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয়েছে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। নির্যাতিতার মা বলেন, “এলাকারই ছেলেরা মেয়ের উপরে অত্যাচার চালাবে, ভাবতে পারছি না। দোষীদের কড়া শাস্তি চাই।”

প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে স্বরূপনগর-হাকিমপুর রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে এলাকার দুষ্কৃতী ও গরু পাচারকারীরা। গ্রামের মেয়েরাও রেহাই পাচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে গরু পাচার বন্ধ করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। এ দিন এলাকায় যান স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডল। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশকে বলা হয়েছে। পুলিশও জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত। সম্ভবত তারা বাংলাদেশে পালিয়েছে। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”

Advertisement

সীমান্তে পাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এই জেলারই গাইঘাটার আংরাইলের সাধারণ মানুষও। বাংলাদেশ থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে ১৫ মে রাতে এলাকার বাসিন্দা, আরপিএফের এক কনস্টেবলকে কুপিয়ে খুন করে। প্রতিবাদে বুধবার প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে তৃণমূল-বিজেপি সহ সব রাজনৈতিক দলের নেতারা হাজির ছিলেন। অনুপ্রবেশ রুখতে সরব হন সকলে। তাঁদের বক্তব্য, অনুপ্রবেশ না রুখলে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলবে।

আংরাইল কার্যত বাংলাদেশি দুষ্কৃতী ও পাচারকারীদের ‘স্বর্গরাজ্য’। সন্ধ্যা নামলেই ইছামতী পেরিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ে এলাকায়। মানুষ পাচার তো চলেই, গরু এবং অন্যান্য জিনিসপত্রও নিয়মিত পাচার হয় সীমান্তবর্তী এই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম দিয়ে। কাঁটাতারের বেড়া সর্বত্র নেই। বিএসএফের টহলদারিও পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ। ক’দিন আগে গাইঘাটাতেই বাংলাদেশি দুই বোনকে তুলে এনে ধর্ষণ করে পালায় কয়েক জন বাংলাদেশি দুষ্কৃতী। অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবি করেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, তৃণমূলের ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ। বিজেপির স্থানীয় নেতা রামপদ দাসের বক্তব্য, “প্রশাসন কড়া হলে কাঁটাতারের বেড়া দরকারই হয় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন