ফাইল চিত্র।
তাঁর ইচ্ছা ছিল ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন যাত্রা’ করার। চেয়েছিলেন সেই যাত্রার সর্বেসর্বা হতে। মুকুল রায়ের সেই পরিকল্পনায় আপাতত জল ঢেলে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যাত্রা একটা হবে, তবে তার নাম দল ঠিক করেছে জনজাগরণ যাত্রা। সেখানে মুকুল রায় শুধু নন, অংশ নেবেন বিজেপির আরও আট নেতা।
মুকুল জানিয়েছিলেন, ২৩ ডিসেম্বর বীরভূমের সাঁইথিয়া থেকে যাত্রায় বেরোবেন তিনি। তার পর উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের একের পর এক জেলায় ঘুরবেন তিনি। অন্য দল থেকে কর্মীদের বিজেপিতে যোগদান করাবেন। মুকুলের জেলা সফরের প্রাথমিক তালিকাও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন, আপাতত ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন যাত্রা’র পরিকল্পনা তাঁদের নেই। তাঁরা করবেন ‘জনজাগরণ অভিযান’।
প্রথম দফায় মুকুলের সফরসূচি ছিল ২৩-২৯ ডিসেম্বর। সাঁইথিয়া, রায়গঞ্জ, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। এ দিন দিলীপবাবু জানান, তাঁরা তিনটি দল তৈরি করেছেন। এক দলে থাকছেন তিনি নিজে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় দলে মুকুল, শমীক ভট্টাচার্য, রাজ্যসভা সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তৃতীয় দলে কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, সাংসদ জর্জ বেকার ও মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এই তিন দল বিজেপির ৩৬টি সাংগঠনিক জেলায় সভা করবে। ওই সভাগুলিতেই অন্য দল থেকে কর্মীদের যোগদান করানো হবে। ২৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে ওই কর্মসূচি। বিজেপি সূত্রের খবর, ৩৬টি জায়গার মধ্যে ১৩-১৪টি জায়গায় মুকুল সভা করবেন। বাঁকুড়া এবং বীরভূমে মুকুলের সঙ্গেই থাকবেন দিলীপবাবু।
তা হলে মুকুলের ঘোষিত ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন যাত্রা’ কি হবে না? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘আপাতত ও রকম কর্মসূচি নেই।’’ দিলীপবাবু বলেন, ‘‘একা উনি কোথাও যেতেই পারেন। আমি যেমন একা জেলায় ঘুরে ঘুরে সাংগঠনিক বৈঠক করছি। কিন্তু জনজাগরণ অভিযান কারও একার কর্মসূচি নয়। এটা দলের কর্মসূচি। নেতা যত বড়ই হোন দলের কর্মসূচি মেনেই তাঁর সফর ঠিক হবে।’’ বিজেপির একাংশের মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলকে দলে নিলেও রাজ্য নেতাদের সকলে এখনও তাঁকে আন্তরিক ভাবে মানতে পারছেন না। তাঁদের অনেকের ধারণা, সদ্য তৃণমূল থেকে এসে আদি বিজেপি নেতাদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন মুকুল। যাতে তেমন কোনও বার্তা নীচুতলায় না যায় তা বোঝাতেই রাশ টানার যুক্তি দিচ্ছে দলের অন্য একটি অংশ।