দু’বার দু’রকম বেতনের তথ্য পেশ কলকাতার!

২০১৯ সালে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘র‌্যাঙ্কিং’ (এনআরআইএফ)-এর জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিভিন্ন পাঠ্যক্রম পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের চাকরিতে গড় বেতনের যে-তথ্য দিয়েছে, ২০১৭-র র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য পাঠানো তথ্যের সঙ্গে তা মিলছে না।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৩০
Share:

—ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় মূল্যায়নে এ বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাপিয়ে গিয়ে ব্যাপক হইচই ফেলে দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের বেশি বেতনের চাকরি নিয়ে কলকাতা দু’বার দু’রকম তথ্য দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দ্বিতীয় বারের তথ্যে বার্ষিক বেতন বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে অনেকটাই।

Advertisement

২০১৯ সালে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘র‌্যাঙ্কিং’ (এনআরআইএফ)-এর জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিভিন্ন পাঠ্যক্রম পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের চাকরিতে গড় বেতনের যে-তথ্য দিয়েছে, ২০১৭-র র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য পাঠানো তথ্যের সঙ্গে তা মিলছে না। এনআইআরএফের ওয়েবসাইটে গেলেই বিষয়টি পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। ‘এনআইআরএফ ২০১৯’-এর সম্প্রতি প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছনে ফেলে দিয়েছে কলকাতা।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে ২০১৭ সালে কলকাতা ছিল ষোড়শ স্থানে। ২০১৮ সালে চতুর্দশ। এ বার ন’ধাপ টপকে পঞ্চম। যাদবপুর ষষ্ঠ। এ বারের ফল বেরোনোর পরেই জানা যায়, যাদবপুরের তুলনায় কলকাতা থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা বেশি বেতনের চাকরি পাচ্ছেন। এতে শিক্ষা শিবিরের অনেকেই অবাক হন।

Advertisement

এই কেন্দ্রীয় র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য সব তথ্যই পাঠায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়। এনআইআরএফের সাইটে দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতার পাঠানো তথ্যে স্পষ্ট, একই বিষয়ে দু’বার দু’রকম তথ্য দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে কলকাতা ২০১৫-১৬ সালে চাকরি পাওয়া পড়ুয়াদের গড় বেতনের তথ্য দিয়েছিল। এ বারের র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য আবার ২০১৫-১৬ সালে চাকরি পাওয়া পড়ুয়াদেরই গড় বেতন জানাতে হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালের তুলনায় এ বার তা অনেক বাড়িয়ে বলা হয়েছে। দ্বিগুণ, এমনকি তিন গুণও বাড়ানো হয়েছে!

যেমন, ২০১৭ সালে জানানো হয়েছিল, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সালের দু’বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের গড় বেতন তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এ বার ওই বছরেরই গড় বেতন জানানো হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা! তিন বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম পাশ করে চাকরি পাওয়া পড়ুয়াদের বেতন ২০১৭ সালে জানানো হয়েছিল চার লক্ষ টাকা। এ বার দেখানো হয়েছে সাত লক্ষ ২০ হাজার! পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের গড় বেতন ২০১৭ সালে জানানো হয়েছিল দু’লক্ষ টাকা। এ বার তা বাড়িয়ে ছ’লক্ষ টাকা করা হয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

একই বছরের ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে দু’বার দু’রকম তথ্য কী ভাবে পেশ করা হল, এটা বিভ্রাট নাকি কারচুপি ইত্যাদি প্রশ্ন উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই। ২০১৫-১৬ সালের বেতনের তথ্যের পাশাপাশি ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ সালের বেতনের যে-তথ্য এনআইআরএফ-কে এ বার দেওয়া হয়েছে, তা কতটা সত্যি, উঠছে সেই প্রশ্নও।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্লেসমেন্ট সেল নেই। ক্যাম্পাসিং না-হওয়ায় অতীতে পড়ুয়াদের বিক্ষোভও হয়েছে। তার পরে প্লেসমেন্টের বিষয়টি দেখার জন্য কিছু কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, চাকরির তথ্য কী পদ্ধতিতে জোগাড় করা হচ্ছে?

উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও এই সব বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement