Calcutta High Court

অপমানজনক ব্যবহারও নিষ্ঠুরতা, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় কোর্ট

আদালতের খবর, এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন স্বামী। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তি নিজেই সওয়াল করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৯
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

শুধু মারধর কিংবা খুন-জখম নয়, দুর্ব্যবহার কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দাম্পত্য নষ্ট করাও নিষ্ঠুরতা হতে পারে। সম্প্রতি একটি বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় কার্যত এমন কথাই উঠে এসেছে কলকাতা হাই কোর্টে। ওই মামলার রায়ে এক ব্যক্তির নিজের স্ত্রী এবং সন্তানের প্রতি দুর্ব্যবহার ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে ‘নিষ্ঠুরতা’ বলেই উল্লেখ করেছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

ওই ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নিষ্ঠুরতার কোনও বিধিবদ্ধ সংজ্ঞা নেই। এক জনের কাছে যা নিষ্ঠুরতা অন্য জনের কাছে তা নিষ্ঠুরতা না-ও হতে পারে। কে কোন আচরণকে নিষ্ঠুরতা বলে মনে করবেন, তা এক জন মানুষের বেড়ে ওঠা, শিক্ষা এবং সামাজিক পরিস্থিতির উপরে নির্ভরশীল। বিধিবদ্ধ সংজ্ঞা নেই বলেই আদালত পরিস্থিতি অনুযায়ী নিষ্ঠুরতা হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করতে পারে বলেও ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ।

আদালতের খবর, এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন স্বামী। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তি নিজেই সওয়াল করেছিলেন। তাঁর স্ত্রীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী দেবাশিস রায়, দেবমিত্রা ভরদ্বাজ এবং সুমিত্রা দাস। তাঁরা কোর্টে সংশ্লিষ্ট মহিলার বয়ান পেশ করে জানান, তাঁর স্বামী বিয়ের পর থেকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন। অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময়েও তিনি স্বামীর কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাননি। সন্তানের কাটা ঠোঁট (ক্লেফট লিপ) অস্ত্রোপচারের জন্যও ওই ব্যক্তি কোনও সাহায্য করেননি। মহিলা চাকরি করতে গেলেও নানা ভাবে বাধা পেয়েছেন এবং বেতনের টাকা যৌথ অ্যাকাউন্টে রাখতে বাধ্য করা হয়েছে। একই বাড়িতে স্ত্রী এবং সন্তানের থেকে পৃথক থাকতেন ওই ব্যক্তি। এই ধরনের ব্যবহারকেই ‘নিষ্ঠুরতা’ বলে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানিয়েছে, এই ধরনের অপমানজনক ব্যবহারকে নিষ্ঠুরতা হিসাবেই গণ্য করা উচিত। প্রেম, ভালবাসা তো দূর, ওই ব্যক্তির আচরণে স্ত্রীর প্রতি কোনও সম্মানও দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ওই মহিলাকে স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে বললে তাঁর শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। এই যুক্তিতেই ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে ডিভোর্সের রায় বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন