ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী

সাম্প্রদায়িকতা এবং‌ ইতিহাসের বিকৃতি নিয়ে মোদী সরকারের আগেই বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ইতিহাসবিদেরা। এ বার ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে নাম না করেই কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share:

অতিথি: ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

সাম্প্রদায়িকতা এবং‌ ইতিহাসের বিকৃতি নিয়ে মোদী সরকারের আগেই বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ইতিহাসবিদেরা। এ বার ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে নাম না করেই কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিহাসকে বদলে দেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি তুলে আনলেন ধর্মের নামে পিটিয়ে মারার ঘটনা, হাঙ্গামার প্রসঙ্গও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস কংগ্রেসের উদ্বোধন হয়েছে। শুক্রবার নজরুল মঞ্চে তার বিশেষ অধিবেশনে বক্তা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘তথ্য বিকৃত করে ইতিহাসকে নতুন ভাবে লেখার চেষ্টা চলছে। তাতে কারও কারও রাজনৈতিক অভিসন্ধি সফল হতে পারে। কিন্তু সমাজ উপকৃত হবে না।’’ তথ্যের বিকৃতিকে অপরাধ হিসেবেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তথ্যের সংরক্ষণে এ দিনই জাতীয় রেকর্ড কমিশনের ধাঁচে রাজ্যে রেকর্ড কমিশন গড়ার ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ইতিহাসবিদদের অনেকেরই অভিযোগ, স্বাধীনতা আন্দোলনে আরএসএসের ভূমিকা না থাকলেও বর্তমানে জাতীয়তাবাদকে নতুন সংজ্ঞায় বাঁধতে চাইছে তারা। সেই কারণে মধ্যযুগের ইতিহাস এবং‌ স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধাদের ভূমিকাকেও বদলে ফেলার চেষ্টা চলছে। সেই সূত্র ধরেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘গাঁধী দেশপ্রেমী নয়! গ়ডসে (গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে) দেশপ্রেমী?’’ সমাজে ধর্মের নামে যে মেরুকরণের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠছে তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেন, ‘‘দেশে ধর্মের নামে গণপিটুনি, হাঙ্গামা চলছে। অথচ বৈচিত্রের মাঝে ঐক্যই আমাদের ঐতিহ্য।’’

Advertisement

এই ইতিহাস বদলে ফেলার কারিগরেরা ইতিহাসবিদ নন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্য, ‘‘আমি তো ইতিহাস লিখতে পারব না। ওটা আমার কাজ নয়। এ ভাবে বিকৃতি ঘটতে থাকলে ভবিষ্যতে ইতিহাসের চেহারা কী দাঁড়াবে তা ভেবে শিউরে উঠি।’’

ইতিহাসে বিকৃতির অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গুরু গোবিন্দ সিংহ-সহ অনেক মনীষীর সম্পর্কে ওদের লেখাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিহাস বাঁচাও সমিতি বহু মামলা করেছে। তার ফলে আদালতের রায়ে ওদের পাঠ্যসূচিতে বদল আনতে হয়েছে।’’

ইতিহাসবিদদের কাছে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, দেশের ইতিহাসকে অবিকৃত রাখা সাংবিধানিক কর্তব্য। সেটা যেন তাঁরা করেন। ইতিহাস কংগ্রেসের সভাপতি ইতিহাসবিদ কৃষ্ণমোহন শ্রীমালি বলেন, সেই দায়িত্ব তাঁরা পালন করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement