জেলা আধিকারিক ও ইতিহাস গবেষকদের সঙ্গে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িতে ছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
সেই কোন ছোটবেলা থেকেই তো বর্গভীমার মন্দিরে যাওয়া হয়। কিন্তু ইটপাথরের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ইতিহাসটা জানা হয়নি অন্বেষা দাসের।
হ্যামিল্টন হাইস্কুলে পড়ে পাশের বাড়ির দাদা। কিন্তু সেই স্কুলের যে একটা ঐতিহ্য রয়েছে, জানতই না সুমনা মাইতি।
রোজ দেখা এই সব জায়গাগুলো যে আসলে রাজ্যের গর্ব— তা বুঝিয়ে দিতেই শুরু হল ‘কন্যাশ্রী ট্যুরিজম’। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ১০০ জন কন্যাশ্রীকে নিয়ে শুরু হয় ভ্রমণ। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, উপ-পুর প্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় প্রমুখ। জানা গিয়েছে, জেলার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে জেলা কন্যাশ্রী প্রকল্পের অধীন ছাত্রীদের। তারা ফিরে এসে নিজের নিজের মতো করে তাদের অভিজ্ঞতার কথা লিখে রাখবে। যারা ছবি আঁকতে পারে, তারা ছবিও এঁকে রাখবে ওই সব জায়গার। কন্যাশ্রীদের আঁকা, লেখা ব্যবহার করবে রাজ্য পর্যটন দফতর। দফতরের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সেগুলি প্রকাশ করা হবে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, “জেলায় ‘কন্যাশ্রী ট্যুরিজম’-এর আওতায় ‘তাম্রলিপ্ত দর্শন’ নামে পাইলট প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয় এ দিন। পরে হলদিয়া, কাঁথি এবং এগরা মহকুমাতেও এই প্রকল্প চালু করা হবে।’’ এ দিন পড়ুয়াদের সঙ্গে ছিলেন তিনজন ইতিহাস গবেষক রাজর্ষি মহাপাত্র, মৌসম মজুমদার ও ভাস্করব্রত পতি। তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি, তাম্রলিপ্ত বন্দর, হ্যামিল্টন হাইস্কুল, মাতঙ্গিনীর স্মৃতি সৌধ, জেলা গ্রন্থাগার, তমলুক মিউজিয়াম, মহাপ্রভু মন্দির, বর্গভীমা মন্দির, জিষ্ণুহরি মন্দির, মানিক পীরের দরগা ও রামকৃষ্ণ মঠ ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সে সব জায়গার গুরুত্ব গল্পের ছলে বুঝিয়ে দেন গবেষকরা। আর ছিলেন এক বেসরকারি সংস্থার সদস্যরা। গোটা ভ্রমণটি ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন তাঁরা। তা দিয়ে তৈরি হবে স্বল্প দৈর্ঘের একটি তথ্যচিত্র। যা রাজ্য এমনকী দেশের বা দেশের বাইরের মানুষকেও উৎসাহিত করবে জেলায় এসে একটি সপ্তাহান্তিক ছুটি কাটিয়ে যেতে— আশা জেলা প্রশাসনের।