প্রশ্ন আসেনি। উত্তরপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে!
আগামী ২ জুন, শুক্রবার বিষ্ণুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে মঙ্গলবার প্রস্তুতি বৈঠকে বসেছিলেন জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের কর্তারা। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য প্রশ্ন কী হতে পারে তা ধরে নিয়ে উত্তর তৈরি করে ফেলেছেন জেলার কর্তারা।
যেমন, উপকূল এলাকায় ভেসেল চলাচলের অবস্থা। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, শেষ জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ এলাকায় ভেসেল চলাচলের উপর নজরদারি নিয়ে পরিবহন সচিবকে কিছু নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারও সেই প্রসঙ্গ তুলতে পারেন মমতা। সেটা আন্দাজ করে এই প্রশ্নের উত্তরও তৈরি করে ফেলা হয়েছে। বলা হবে, আপাতত ডায়মন্ড হারবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের কুকুরাহাটি পর্যন্ত ভেসেল চলাচলের কাজ শুরু করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর যে কোনও প্রশ্ন বা খোঁজখবরের মোকাবিলায় রীতিমতো কোমর বেধে নামছে জেলা প্রশাসন। কীরকম? জেলার এক কর্তা জানান, ‘আমরা সব করে ফেলেছি’ জাতীয় বার্তা দিলে মুখ্যমন্ত্রী গাফিলতি ধরে ফেলতে পারেন। সেই কারণে কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করা হবে যেখানে কাজ হয়নি। যেমন মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হবে, খেলার মাঠের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য অর্থ চেয়ে যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সব জেলা। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সেই কাজটা করে উঠতে পারেনি।
আরও
‘কে কত বড় নেতা, কত বড় মস্তান, নামটা শুনি!’
মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জেলার সব স্তরের অফিসারেরা যাতে একই রকম তথ্য দেন, সে বিষয়ে প্রত্যেককে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে হাজির এক বিডিও-র কথায়, ‘‘ব্লক ধরে ধরে ১০০ দিনের কাজ, সবুজসাথী, কন্যাশ্রী- সহ প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের হিসেব মিলিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’ জেলার ২৯টি ব্লকের বিডিও এবং জেলা পরিষদের সব বিভাগের কর্মাধক্ষ্যরা রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো বিষয়ে যাবতীয় পরিসংখ্যান তৈরি করে তা অতিরিক্ত জেলা শাসক ও জেলা শাসকের হাতে তুলে দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, মুখ্যমন্ত্রী অনেক সময় বিডিও বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে সরাসরি প্রশ্ন করে বসেন। সে কথা মাথায় তাঁদের সব কাগজপত্র তৈরি রাখতে বলা হয়েছে।
এ দিন প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে প্রশাসনের কর্তারা উপস্থিত সকলকে মনে করিয়ে দেন, ‘‘আগ বাড়িয়ে কোনও কথা নয়। শুধু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তর দিয়েই চুপ করে বসে পড়তে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে কোনও প্রস্তাব দেওয়ারও প্রয়োজন নেই।’’