ক্লাসটা করুন, শিক্ষকদের বিঁধলেন পার্থ

নতুন নিয়মে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ হাজিরা না-থাকলে প়ড়ুয়াদের কেউ ছাত্রভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। ছাত্রছাত্রীদের হাজিরায় কড়াকড়ি। অথচ শিক্ষকেরাই নিয়মিত আসেন না বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যায়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। —নিজস্ব চিত্র।

ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের হাজিরা-ঘাটতি নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। নিয়মিত ক্লাস না-করার জন্য এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিঁধলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উষ্মা প্রকাশ করলেন কলেজে বাড়তি ছাত্র ভর্তি নিয়েও।

Advertisement

১ জুন তারকেশ্বরের প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী আন্তঃ-ক্যাম্পাস বাস চালু করার জন্য আবেদন জানান। বাস পরিষেবার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সেই বাসের উদ্বোধন করতে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে যান শিক্ষামন্ত্রী। প্রথমে শতবার্ষিকী অডিটোরিয়ামে বক্তৃতা দেন তিনি। শিক্ষকদের ক্লাস-ফাঁকি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেক উচ্চ স্তরের শিক্ষক তো এক জন আইএএস অফিসারের থেকেও বেশি বেতন পান। কিন্তু নিয়মিত ক্লাসটা তো করুন! ঘনঘন বিদেশে যাচ্ছেন। সেখান থেকে কী (মেধা) আনছেন, সেটা পড়ুয়াদের দিন!!’’

নতুন নিয়মে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ হাজিরা না-থাকলে প়ড়ুয়াদের কেউ ছাত্রভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। ছাত্রছাত্রীদের হাজিরায় কড়াকড়ি। অথচ শিক্ষকেরাই নিয়মিত আসেন না বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন মন্ত্রী। বাম শিক্ষক সমিতি (কুটা)-র সাধারণ সম্পাদক রামপ্রহ্লাদ চৌধুরী পরে বলেন, ‘‘প্রশাসনিক উচ্চ স্তর থেকে শিক্ষকসমাজের প্রতি বারবার যে-ধরনের ভাষা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত অপমানজনক। এই ভাষা আদৌ কাম্য নয়।’’

Advertisement

কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র নেওয়া যাবে না বলে ফের জানান শিক্ষামন্ত্রী। উপাচার্য আশুতোষ ঘোষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে-কলেজে দু’হাজার আসন, সেখানে ছ’হাজার পড়ুয়া ভর্তি করা হচ্ছে। তাই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৬-৭ শতাংশে নেমে যাচ্ছে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। এটা দেখার দায়িত্ব ইনস্পেক্টর অব কলেজেস (আইসি)-এর।’’ আইসি দেবাশিস বিশ্বাসের খোঁজ করতে থাকেন তিনি। পরে আইসি-কে উদ্দেশ করে তিনি উপাচার্যকে বলেন, ‘‘এর জন্য উনি দায়ী। পারলে নতুন কলেজ করে দিন। এ ভাবে চলে নাকি? ক্লাসরুম নেই। পড়ুয়ারা বসবে কোথায়?’’

বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নিয়ে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন পার্থবাবু। তাঁর প্রশ্ন, একই প্রতিষ্ঠানে এত সংগঠন কেন? দর্শকাসন থেকে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দাদা, আমাদের সঙ্গে একটু বসুন। কিছু কথা আছে।’’ রেগে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে নিজেদের মধ্যে ঠিক করুন। আমি আসব আর নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হবে, এটা চলবে না।’’

মন্ত্রীকে বিড়ম্বনায় ফেলে দেন স্নাতকোত্তর বাংলার ছাত্রী পায়েল সাহা। মন্ত্রীর সামনে হাত জোড় করে কাঁদতে কাঁদতে ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের মেধাবৃত্তি প্রকল্পে দু’বছরে ৪৮ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু এক টাকাও পাইনি। বিকাশ ভবনে বারবার দরবার করেও কাজ হয়নি।’’ উচ্চশিক্ষা সচিবের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন