সুস্থ: হাসপাতালে নার্সের সঙ্গে ছবিতাদেবী।—নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটির পরে তমলুক জেলা হাসপাতাল। ‘রেফার’ সংস্কৃতির বাইরে হেঁটে বিরল অসুখে আক্রান্ত রোগীকে বাঁচানোর কৃতিত্ব ফের জেলার মুকুটে।
৯ মার্চ তমলুক হাসপাতালে আনা হয়েছিল অচৈতন্য ছবিতা মণ্ডলকে। পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদার বছর পঁচিশের ওই বধূর তখন ন’মাসের গর্ভাবস্থা। শরীরে খিঁচুনি, প্রস্রাব বন্ধ। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রায় জবাব দিয়ে বলেন, ‘কলকাতা বা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।’ ছবিতার স্বামী বিশ্বজিৎ মণ্ডল তাঁকে তমলুকে এনে চিকিৎসকদের বলেছিলেন, ‘‘যা করার করুন।’’
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত দে বলেন, ‘হেল্প সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত ছিলেন ছবিতা। সাধারণত ‘হাইপার টেনশনের’ রোগিণী প্রসবের ঠিক আগে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মৃত্যুর হারও খুব বেশি। অমিতবাবুর কথায়, ‘‘হাজার জনে দু’-এক জনের এমন হতে পারে।’’ তা-ও ছবিতাদেবীকে ফেরায়নি জেলা হাসপাতাল। গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যুর পরেও ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে’ রেখে চিকিৎসা চলেছে। ১২ দিন পরে জ্ঞান ফিরেছে প্রসূতির। তিন সপ্তাহ সিসিইউ-এ থেকে ছবিতা অনেকটাই সুস্থ। তমলুক জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘পরিকাঠামোগত সমস্যা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা যা করেছেন, তা প্রশংসনীয়।’’ কলকাতার দুই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় এবং সঞ্জিত চক্রবর্তীও মানছেন সেই কথা।
শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, কথা বলছেন ছবিতা। তাঁর স্বামী বিশ্বজিতের বক্তব্য, ‘‘স্ত্রীকে বাঁচিয়ে চিকিৎসকেরা যে অসাধ্য সাধন করলেন, তাতে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’’