Dengue

সরকারি চাপে আর কাজ করা যাচ্ছে না, প্রতিবাদ চিকিৎসকদের

বিশেষ করে ডেথ সার্টিফিকেট লেখা নিয়ে যে চাপ আসছে, তাতে পরবর্তী কালে তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন বলেও মনে করছেন অনেক চিকিৎসক।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

ডেঙ্গি নিয়ে লাগাতার সরকারি চাপের মধ্যে কাজ করতে করতে এ বার সম্মিলিত ভাবে রুখে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন চিকিৎসকেরা। প্রতিবাদী চিকিৎসকদের বক্তব্য, এ ভাবে চাপের মধ্যে কাজ করার জন্য রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এত দিন নানা বিষয়ে মুখ বুজে থাকলেও, সরকারি চিকিৎসকদের অনেকেই প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রেরই খবর। স্বাস্থ্যকর্তাদের একটা বড় অংশও মনে করছেন, এই প্রতিবাদের দরকার আছে। তৃণমূলপন্থী চিকিৎসক নেতাদের কেউ অবশ্য নিজেদের জড়াতে চাইছেন না।

Advertisement

আগামী সোমবার চিকিৎসকদের সাতটি সংগঠন ডেঙ্গির চিকিৎসা বিধি নিয়ে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। এতে সামিল হচ্ছে ডক্টর্স ফর ডেমোক্র্যাসি, ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম, ন্যাশনালিস্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ডক্টর্স অব ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েশন। উদ্যোক্তাদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে ভাবে ডাক্তাররা সরকারি চাপের মুখে পড়ছেন এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তাঁদের চিকিৎসা করতে হচ্ছে তাতে সম্মেলন ডেকে সবার মতামত নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আইএমএ-র রাজ্য শাখাকেও। আইএমএ-র রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক, তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তনু সেন অবশ্য দাবি করেছেন, কোনও আমন্ত্রণ আসেনি। সম্মেলনের উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর বক্রোক্তি, ‘‘মুষ্টিমেয় কিছু চিকিৎসক বিশেষ অভিসন্ধি নিয়ে এটা করছেন।’’

আরও পড়ুন:সত্যিই গোপন হচ্ছে তথ্য? তদন্তে নামছে কেন্দ্র

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই অবশ্য খবর, রোগীর প্রেসক্রিপশনে ডেঙ্গির পরিবর্তে ‘অ্যাকিউট ফেবরাইল ইলনেস’ এবং এনএস১ কিংবা আইজিএম পজিটিভ-এর পরিবর্তে সেরোপজিটিভ লিখতে বলা হচ্ছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘এ ভাবে চললে সরকারের পক্ষে ভাল নাও হতে পারে। কারণ, রোগীরাই সুচিকিৎসা থেকে ব়ঞ্চিত হবেন।’’ বিশেষ করে ডেথ সার্টিফিকেট লেখা নিয়ে যে চাপ আসছে, তাতে পরবর্তী কালে তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন বলেও মনে করছেন অনেক চিকিৎসক।

সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা, চিকিৎসক রেজাউল করিম জানান, প্রাথমিক ভাবে অসুখটাকে অ্যাকিউট ফেবরাইল ইলনেস যদি বলাও যায়, রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে ওই অস্পষ্টতা রাখা যায় না। নির্দিষ্ট তথ্য জানাতেই হয়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে যদি অন্য কিছু করতে বলা হয়, তা হলে সেটা সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ম বিরোধী।’’ চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, ‘‘ডাক্তাররা যাতে চাপমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারেন, সেটা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন