‘উধাও’ সারদা মেডিটেকের নথি, দাবি সিবিআইয়ের

সারদা তদন্তে আবার নথি ‘গায়েবে’র অভিযোগ তুলল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এবারের অভিযোগ সারদা মেডিটেকের নথি নিয়ে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

অযত্নে মেডিটেকের অ্যাম্বুল্যান্স। পুরুলিয়ার বলরামপুরে। নিজস্ব চিত্র

সারদা তদন্তে আবার নথি ‘গায়েবে’র অভিযোগ তুলল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এবারের অভিযোগ সারদা মেডিটেকের নথি নিয়ে।

Advertisement

২০১১ সালের মাঝামাঝি রাজ্য সরকার ও সারদা-র যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় সারদা মেডিটেক প্রকল্প। উদ্দেশ্য ছিল, জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া। ওই সব এলাকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য় কর্মীদের নিয়ে গিয়ে শিবিরও করা হয়েছিল। ভাড়া করা হয়েছিল ১২টি অ্যাম্বুল্যান্স ও বেশ কিছু মোটরবাইক। যৌথ উদ্যোগে শুরু হলেও প্রকল্পে পুরো টাকা ঢেলেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন।

রাজ্য সরকারের তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) সারদা নিয়ে তদন্ত শুরু করে। পরে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার দিলে সিট-এর তরফে তাদের নথিপত্র দেওয়া হয়। পরে সিবিআই অভিযোগ করে, বাজেয়াপ্ত করা সমস্ত নথি তাদের দেওয়া হয়নি।

Advertisement

সারদা মেডিটেকের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের দাবি, সিট-এর তরফে বিধাননগর কমিশনারেটের তদন্তকারী এক অফিসার ২০১৩ সালে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার বিভিন্ন লজে হানা দিয়ে কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত নথির পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সঙ্গে সারদার যৌথ উদ্যোগের নানা ছবি ও পোস্টারও তাতে ছিল। অভিযোগ, পরে তা সিবিআইকে দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, পুরুলিয়ার বলরামপুরে একটি লজেই ছিল সারদা মেডিটেকের প্রধান ইউনিট। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা এবং বাঁকুড়ার খাতরার দু’টি লজও তারা ভাড়া নিয়েছিল।

সিট-এর তৎকালীন প্রধান, এখন রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ কর্তার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোনও উত্তর আসেনি।

সিবিআইয়ের দাবি, মাস পাঁচেক আগে জেলে সুদীপ্তকে সারদা মেডিটেক নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন অনেক তথ্য দেন সুদীপ্ত। সিট-এর তরফে যে অফিসার লজে হানা দিয়েছিলেন, ২০১৪ সালে তাঁকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি থানায় বদলি করে দেওয়া হয়। নথির হদিস পেতে বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই অফিসারকে বেশ কয়েকবার ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। অভিযোগ, তিনি আসেননি। সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সম্প্রতি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সারদা মেডিটেকের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন কর্মীকেও। এক কর্মী জানিয়েছেন, ওই সময়ে খুব তাড়াহুড়ো করে মাসিক ৫০ হাজার টাকায় এক-একটি লজ ভাড়া নেওয়া হয়। ওই কর্মীদের নিয়েই সিবিআইয়ের একটি দল তিন জেলায় তল্লাশি অভিযান চালান। বলরামপুরের লজের পিছনে ঝোপজঙ্গলে কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স ও দু’টি মোটরবাইকের হদিস পেয়েছে সিবিআই। ওই সব অ্যাম্বুল্যান্স ও বাইকে সারদা মেডিটেক লেখা রয়েছে। তবে সংস্থার এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, লজ ভাড়া সংক্রান্ত বা সংশ্লিষ্ট কোনও নথি কোনও লজ থেকে পাওয়া যায়নি। ওই লজগুলির মালিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement