Dhanadhanyo Auditorium

‘আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না’, দিল্লির নিন্দা, বাংলার জয়গানের মধ্যেই মমতার গলায় কি ‘অভিমান’!

বৃহস্পতিবার অত্যাধুনিক ‘ধনধান্য’ প্রেক্ষাগৃহের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী, শিল্পী এবং বিশিষ্টরা। সেখানেও মমতার গলায় ছিল খানিক অভিমানের সুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২২
Share:

মুখ্যমন্ত্রীর অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহ তৈরির ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিশিষ্টরা। ফাইল চিত্র ।

রাজ্যের এবং মানুষের ভাল করার যাবতীয় চিন্তাভাবনা তিনি পেয়েছেন মানুষের কাছ থেকেই। তাঁর শুধু একটিই মাত্র চাহিদা— মানুষ যেন তাঁকে কোনও ভাবে ভুল না বোঝেন। বৃহস্পতিবার বিকালে আলিপুরের ‘ধনধান্য অডিটোরিয়াম’ উদ্বোধন করতে এসে এমনটাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজ্য সরকারের তৈরি অত্যাধুনিক ছ’তলা প্রেক্ষাগৃহ ‘ধনধান্য অডিটোরিয়াম’-এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পয়লা বৈশাখের আগে কলকাতা তথা বাংলার মানুষকে নতুন উপহার দিলেন মমতা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই ছ’তলা প্রেক্ষাগৃহে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। শাঁখের আদলে তৈরি প্রেক্ষাগৃহ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪৪০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী, শিল্পী এবং বিশিষ্টরা। ‘ধনধান্য’ প্রাঙ্গণ যেন চাঁদের হাট হয়ে উঠেছিল। উপস্থিত সকলেই প্রেক্ষাগৃহ তৈরির কৃতিত্ব দিয়েছেন মমতাকে। অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহ তৈরির ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিশিষ্টরা।

পরে নিজের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার সব ভাবনাচিন্তা মানুষের থেকে পাওয়া। আমার নিজের ইচ্ছা একটাই। মানুষ যেন কোনও দিন আমাকে ভুল না বোঝেন। হয়তো কখনও কখনও ভাল কাজ করার মতো টাকা থাকবে না। হয়তো অন্য বাধা থাকবে। তবে টাকা না থাকলে, আঁচল পেতে টাকা ভিক্ষা করব। কিন্তু, দিল্লির কাছে টাকা চাইব না।’’

Advertisement

হঠাৎ কেন মানুষের ভুল বোঝার প্রসঙ্গ মমতার গলায় উঠে এল? তা হলে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রাম বাংলার মানুষকেই বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী? মুখ্যমন্ত্রীর গলায় বৃহস্পতিবার সে ভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিয়ে বিরোধিতার সুর ছিল না। তাঁর গলায় যেন অন্য সুর। অনেক বেশি বাংলার কথা, বাংলার সংস্কৃতির কথা, বাঙালির শিল্পীসত্তার কথা। তারই মধ্যে আর্জি, কেউ যেন কোনও দিন তাঁকে ভুল না বোঝেন।

২০২১ সালে কঠিন নির্বাচনে জিতে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বারের জন্য সরকার গঠন করেছেন মমতা। কিন্তু তার পর থেকে দলের উপর দিয়ে অনেক ঝড়ঝাপটা চলছে। দলের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতারও হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। দলের ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ কর্মসূচিও বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের মুখ পড়েছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তাঁর ‘দূতেরাও’। এর মধ্যেই সম্প্রতি হওয়া সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে হেরে গিয়েছেন তাঁর দলের প্রার্থী। সব মিলিয়ে গত জুলাই থেকেই নানা টানাপড়েনের সম্মুখীন হয়েছে তৃণমূল। বিরোধীরা তাঁর দিকেও নানা ইস্যুতে আঙুল তুলছে। সেই সব কারণেই কি মমতার গলায় অভিমানী সুর!

পাশাপাশি বাংলার শিল্পী এবং শিল্পীসত্তার কথা বার বার উঠে এসেছে তাঁর কথায়। এ-ও জানিয়েছেন, তিনি যেমন রাজনীতিতে পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করে যাচ্ছেন, তেমনই শিল্পীদের মধ্যেও পরের প্রজন্ম উঠে আসবে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষদের জন্য যা কিছু করতে পেরেছি তার কারণ, বাংলার মানুষ আমার পাশে ছিলেন। যতটা পেরেছি করেছি, আগামী দিনে আরও করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন