আকাশ মেঘলা থাকার কারণে এতে স্বস্তির থেকে অস্বস্তিই বাড়বে বেশি।
অবশেষে তাপপ্রবাহের হাত থেকে সাময়িক রক্ষা পেল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশ। গত কয়েক দিন ধরে যে অসহ্য গরমে দমবন্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, রবিবারের হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন শহর ও শহরতলির মানুষেরা।
তবে আবহবিদরা বলছেন, আকাশ মেঘলা থাকার কারণে এতে স্বস্তির থেকে অস্বস্তিই বাড়বে বেশি। এই বৃষ্টি যে বর্ষার নয় সেটাও জানিয়েছেন তাঁরা। প্রবল গরমের জন্য জলীয় বাষ্প হালকা হয়ে উপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে স্থানীয় ভাবে মেঘ তৈরি হচ্ছে। আর সেই মেঘ যেখানে যেখানে জমছে সেখানেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। এ দিন দক্ষিণবঙ্গের যে সব অংশে বৃষ্টি হয়েছে তার পিছনে এটাই কারণ বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।
মৌসুমি বায়ু দুর্বল। সাগরে কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপও নেই। তার ফলে বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে গরম হাওয়া ঢুকছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। ফলে গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রার পারদ হু হু করে বেড়েছে। গত দু’দিনে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে যায়। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাপপ্রবাহ। ফলে এই দুইয়ের প্রভাবে নাজেহাল কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ।
আরও পড়ুন: বাধা পাচ্ছে না লু, তাই বেড়েই চলেছে পারদ
স্বাভাবিক নিয়মে জুনের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে বর্ষা ঢুকে পড়ার কথা। নিম্নচাপের হাতে ধরে গত ১১ জুন এ রাজ্যে বর্ষা ঢোকে। ক্রমে তা উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হলেও, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু এর থেকে এখনও পর্যন্ত বঞ্চিত হয়ে রয়েছে।
কেন এই অবস্থা?
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে,নিম্নচাপের টানে গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা ঢুকলেও তা খুবই দুর্বল। ফলে সে পূর্ব ভারতেই ঠিক মতো ছড়ায়নি। এই আটকে থাকার ফলে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রবল গরম রয়েছে। তার ফলেই সেখান থেকে গরম হাওয়া বইছে। পুবালি হাওয়া বন্ধ হওয়ায় সেই লু-এর সামনে কোনও বাধা না থাকার কারণে তা এ রাজ্যে ঢুকছে।
আরও পড়ুন: আদিবাসীদের আলাদা সভায় ভাঙনের শঙ্কা
এ দিনের হালকা বৃষ্টিতে মুখে হাসি ফুটলেও, তা যে ক্ষণিকের জন্য সে বার্তাও দিয়েছেন আবহবিদরা। তাই কবে বর্ষা আসবে? কবে এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি মিলবে? এগুলোই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। যদিও আবহবিদরাও বর্ষা নিয়ে এখনই আশার আলো দেখাতে পারছেন না। ফলে গরমের দাপট যে আরও কয়েক দিন রাজ্যবাসীকে নাজেহাল হতে হবে বলাই বাহুল্য।