ময়না-কাণ্ডে নাটের গুরু দুলাল, দাবি মানিকের

ময়নায় চোলাই মদ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মদ ব্যবসায়ী মানিক রুইদাসকে ১০ দিনের পুলিশ হেফজাতের নির্দেশ দিল আদালত। চোলাই মদ খেয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার পরেই ময়নার কিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা মানিক গত রবিবার সন্ধ্যায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০১:২৯
Share:

আদালতে মানিক রুইদাস।

ময়নায় চোলাই মদ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মদ ব্যবসায়ী মানিক রুইদাসকে ১০ দিনের পুলিশ হেফজাতের নির্দেশ দিল আদালত। চোলাই মদ খেয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার পরেই ময়নার কিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা মানিক গত রবিবার সন্ধ্যায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তদন্ত নেমে পুলিশ গত বুধবার রাতে ওড়িশার বালেশ্বর জেলার চন্দনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করে তাঁকে। শুক্রবার তাঁকে তমলুক মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

Advertisement

শুক্রবার তমলুক মহকুমা আদালতে আসা মানিক রুইদাস অবশ্য দাবি করেন, ‘‘চোলাই মদের ব্যবসা করলেও মদ তৈরি করতাম না। মদ তৈরি করত কালিকাদাঁড়ি গ্রামের দুলাল বিষয়ী। পেটুয়া মোড়ে দুলালের বাবা বলাই বিষয়ী মদের ঠেক চালায়। আমিও দুলালের কাছ থেকে মদ নিয়ে এসে ব্যবসা করতাম।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমার মতো ময়না, ভগবানপুর ও নন্দকুমারের বিভিন্ন এলাকায় মদের ব্যবসায়ীদের কাছে মদ সরবরাহ করে দুলাল। দুলালের সরবরাহ করা মদ খেয়েই ময়না ও ভগবানপুর এলাকায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’’

মানিক জানান, ‘‘ময়নার বাকচা এলাকার বরুনা গ্রামে কেলেঘাই নদীর চরে দুলালের মদ তৈরির বড় ভাটি রয়েছে। চোলাই মদ তৈরির জন্য সেখানে ৬টি বড় উনুনও রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন কয়েক’শো লিটার মদ তৈরি হয়। দুলালের মদ তৈরির ভাটিতে ৬ -৭ জন কাজ করে। দীপক সিংহ ওই মদ পৌঁছে দিত ময়না, ভগবানপুরের বিভিন্ন এলাকায়। আমার কাছেও দীপক মদ পৌঁছে দিত।’’ মানিকের দাবি, ‘‘গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দুলালের মদের ভাটি থেকে দীপক আমার কাছে চোলাই মদ পৌঁছে দিয়েছিল। সেই মদ খেয়ে পরদিন দীপক সিংহ-সহ অনেকের মৃত্যুর ঘটনার পরে দুলাল রবিবার সকালে আমাকে ফোন করে খোঁজ নেয় কারা মারা গিয়েছে। এরপর সন্ধ্যায় দুলাল ফের আমাকে ফোন করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলে। তারপরেই আমি স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে ওড়িশার চন্দনেশ্বরে এক আত্মীয়ের কাছে চলে গিয়েছিলাম।’’ ময়নার পেটুয়ামোড়ের কাছে কালিকাদাঁড়ি গ্রামে দুলাল কয়েকবছর আগে একটি নতুন পাকা বাড়ি তৈরি করেছে। ওই বাড়ির পাশে একটি পুকুরের চার দিকেই পাকার দেওয়াল দিয়ে বাঁধানো রয়েছে। স্থানীয় পেটুয়া মোড় বাজারে দুলালের বাবা বলাই বিষয়ীর চোলাই মদের ঠেক রয়েছে। চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনার জেরে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় দুলালের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। মদের ঠেকেও ভাঙচুর চালিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে মানিক রুইদাস, চন্দন সাঁতরা, গৌরহরি তেওয়ারি, দুলাল বিষয়ী-সহ বেশ কয়েকজন চোলাই মদ ব্যবসায়ীদের নাম উঠে এসেছিল। এদের মধ্যে মানিক, চন্দন, গৌরহরি-সহ বেশ কয়েকজন চোলাই মদ ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। দুলাল বিষয়ীকেও ধরার জন্য তদন্ত চলছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন