যে মাঠে দুর্গাপুজো হয়, সেখানেই আবার এসে মেলে মহরমের তাজিয়া। পুজোয় চাঁদা দেন মুসলিমরা। আবার মহরম উপলক্ষে যে লাঠিখেলা হয়, তাতে সেরার পুরস্কার দেয় দুর্গাপুজো কমিটি। জলপাইগুড়ির পিলখানায় এমনই রেওয়াজ। পুজোর দায়িত্বে থাকা কলেজছাত্রীরা ঠিক করেছেন, লাঠিখেলায় এ বার পুরস্কারের মান বাড়াতে হবে। সে জন্য বাজেট কমিয়ে ‘থিম’ থেকে সাবেকে ফিরেছে তাঁদের পুজো।
মহরমের দিন বিসর্জন নিয়ে রাজ্য জুড়ে বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে জলপাইগুড়ির পিলখানা সর্বজনীন পুজো কমিটির এই সিদ্ধান্ত সম্প্রীতির নজির রাখবে, মনে করছেন এলাকার মানুষ। উদ্যোক্তাদের অন্যতম সুদীপ্তা দাস, পূজা কর্মকারদের কথায়, ‘‘চার দিকে কত ভেদাভেদের কথা শুনি৷ কিন্তু আমরা এখানে দুই সম্প্রদায়ই একে অন্যের উৎসব-অনুষ্ঠানে সমান ভাবে অংশ নিই৷ লাঠিখেলায় সেরাদের হাতে এ বারে একটু ভাল পুরস্কার দিতে পারলে তাই আমাদেরই ভাল লাগবে৷’’ পুজো কমিটির সম্পাদিকা পিকি ঘোষ দাস বলেন, ‘‘দু’টি অনুষ্ঠানকেই আমরা নিজেদের বলে মনে করি৷’’
একই সুর শোনা গেল কেরামত আলি, মহম্মদ জইনুলদের গলাতেও। কেরামত যেমন বলেন, ‘‘অন্য কোথায় কী হয় জানি না। এখানে আমরা একে অন্যের আনন্দে, দুঃখে সব সময় পাশে থাকি।’’ জইনুলের কথায়, ‘‘আমরা তো পুজোয় চাঁদা দিই। ছেলেমেয়েদের নিয়ে মণ্ডপে গিয়ে আনন্দ করি। দশমীর দিন বিসর্জনের পরে প্যান্ডেল খুলতেও ওদের সাহায্য করি।’’
দুর্গাপুজোর জন্য প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। একই সঙ্গে পুরস্কার কেনা নিয়েও আলোচনা চলছে। কী পুরস্কার? উদ্যোক্তারা হেসে বলছেন, ‘‘ওটা এখন ‘সিক্রেট’ই থাক!’’