বাড়বে রাজস্ব, কমবে কারচুপি, ই-নিলামে কাঠ বেচবে রাজ্য

বনজ সম্পদের নিলামের ক্ষেত্রে এ বার বড়সড় পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার। কাঠ-নিলামের ক্ষেত্রে ঘুঘুর বাসা ভাঙতে রাজ্যব্যাপী ‘ই অকশন’ চালু হচ্ছে। দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে যে কেউ রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইটে ঢুকে অনলাইনে নিলামের দর হাঁকতে পারবেন। অবশ্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

বনজ সম্পদের নিলামের ক্ষেত্রে এ বার বড়সড় পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার। কাঠ-নিলামের ক্ষেত্রে ঘুঘুর বাসা ভাঙতে রাজ্যব্যাপী ‘ই অকশন’ চালু হচ্ছে। দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে যে কেউ রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইটে ঢুকে অনলাইনে নিলামের দর হাঁকতে পারবেন। অবশ্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের এমডি সুব্রত ধুন্দিয়াল বলেছেন, “সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী অনলাইনে বনজ সম্পদের নিলাম ডাকা শুরু হয়েছে।”

Advertisement

এত দিন বন উন্নয়ন নিগমের মাধ্যমে দফতরের ডিপোয় নিলাম ডাকা হত। স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীরাই ওই সব নিলামে যোগ দিতেন। নিলাম ঘিরে কারচুপির অভিযোগ ছিল। এক শ্রেণির কাঠ ব্যবসায়ীরা বছরের পর নিলামে যোগ দিয়ে কাঠ কিনে নিতেন। কখনও কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের মধ্যে গড়পেটা করে কম দামে বনজ সম্পদ কিনে নিতেন বলে অভিযোগ। পরে সেই সমস্ত কাঠ ফের গোপনে নিলামে তুলে তা চড়া দরে বেচে মুনাফা লুটত কাঠ-মাফিয়ারা। এর ফলে, প্রতি অর্থ বর্ষে বন দফতরের বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্বের ক্ষতি হত।

বনকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধেও স্থানীয় স্তরে নিলাম প্রক্রিয়ায় বিশেষ কয়েক জন ব্যবসায়ীকে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠত। এলাকার ব্যবসায়ীরা তাঁদের ক্ষমতা অনুযায়ী কাঠের সর্বোচ্চ দর হাঁকতেন। যা প্রকৃত দরের তুলনায় কম। ফলে, সর্বোচ্চ দরপ্রদানকারীকে কম দরে কাঠ বিক্রি করতে বাধ্য হত বন দফতর। গত বছর ঝাড়গ্রামে নিলামে কেনা বেশ কিছু কাঠ পরে গোপনে নিলামে তা চড়া দামে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় কিছু কাঠ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। কয়েক জনকে ধরেও পরে প্রভাবশালীর চাপে পিছু হটেছিলেন বন আধিকরিকরা। বন দফতরের এক কর্তা মানছেন, বনজ সম্পদের নিলাম ব্যবস্থায় মৌরসিপাট্টা চলছিল। ফলে, ২০১৪-১৫ বর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় জঙ্গলের কাঠ নিলাম করে বন দফতরের আয় হয়েছিল মাত্র ৬৮ কোটি টাকা। বন সুরক্ষা কমিটিগুলি লভ্যাংশ বাবদ পেয়েছিল সাত কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। ২০১৫-১৬ বর্ষে নিলামে কাঠ বিক্রি করে ৭০ কোটি টাকা আয় হয়। বন সুরক্ষা কমিটিগুলি পায় প্রায় ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।

Advertisement

এর পরই পুরো নিলাম ব্যবস্থাই অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৩০ জানুয়ারি থেকে রাজ্যবাপী ‘ই-অকশন’ চালু হয়েছে। বন উন্নয়ন নিগম সূত্রে খবর, আগামী এক বছরে বিপুল রাজস্ব সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে। আগে বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা বনজ সম্পদ বিক্রির ২৫% লভ্যাংশ পেতেন। এ বছরের জানুয়ারি থেকে থেকে বন সুরক্ষা কমিটিগুলিকে ৪০% লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এতে রাজ্যের কয়েক হাজার বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য উপকৃত হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন