Eastern Railways

‘কোচ মিত্র’ ব্যবস্থায় কাজের ধরন বদল, ট্রেনে অভিযোগের সুরাহা

পাশাপাশি, জানানো হচ্ছে ৬২৯১৩১০২১৭ এবং ৬২৮৯৫৩৬৯২৬— এই দু’টি হেল্পলাইন নম্বর। রেল সূত্রের খবর, আগাম জানিয়ে দেওয়ার ফলে যাত্রীদের উদ্বেগ কমেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দূরপাল্লার বিভিন্ন ট্রেনের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে রেলের ঘরে জমা হওয়া অভিযোগের সংখ্যা নেহাত কম নয়। রেল মদত অ্যাপ খুললেই বোঝা যায়, অপরিচ্ছন্ন কামরা ছাড়াও শৌচালয়ের দুরবস্থা, জল ফুরিয়ে যাওয়া, বাতানুকূল যন্ত্র ঠিক মতো কাজ না করা-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগের পাহাড় জমে রয়েছে। প্রায়ই ওই সব অভিযোগের দ্রুত সুরাহা করতে রেলের পদস্থ কর্তাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়। এর সমাধানে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন সফরের মধ্যে ট্রেন পরিচ্ছন্ন করার চালু ব্যবস্থাকেই নতুন ভাবে প্রয়োগ করা শুরু করেছে। রেলের দাবি, এর ফলে অভিযোগ আসার প্রবণতা কমেছে ৯৫ শতাংশের বেশি।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, শিয়ালদহ ডিভিশনের দূরপাল্লার সব ট্রেনকে ওই ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। ‘কোচ মিত্র’ নামের ওই ব্যবস্থায় দিবারাত্রি একটি হেল্পলাইন নম্বর খোলা থাকে। সেই নম্বরে ফোন করে যাত্রীরা যেমন নিজেদের পি এন আর নম্বর এবং কামরার নম্বর উল্লেখ করে সমস্যার কথা জানাতে পারেন, তেমনই ট্রেনের মধ্যে সশরীরে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। যাত্রীদের একটি বড় অংশ এখনও হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে বা নির্দিষ্ট অ্যাপ ডাউনলোড করে তার মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে সড়গড় নন বলেই জানাচ্ছেন রেল কর্তারা। ফলে, সমস্যায় পড়লে পরিচিতদের ফোনে জানানো অথবা সমস্যা মেনে নিয়ে সফর করার পরিস্থিতি তৈরি হত। বিভিন্ন সময়ে ওই সব অভিজ্ঞতার কথা সমাজমাধ্যমে উগরে দিতেও দেখা গিয়েছে যাত্রীদের।

সেই সমস্যা মেটাতে সফরের শুরুতে ট্রেনেই কামরা পরিচ্ছন্ন করার কাজে যুক্ত কর্মীরা যাত্রীদের কাছে গিয়ে পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে দিচ্ছেন। পাশাপাশি, জানানো হচ্ছে ৬২৯১৩১০২১৭ এবং ৬২৮৯৫৩৬৯২৬— এই দু’টি হেল্পলাইন নম্বর। রেল সূত্রের খবর, আগাম জানিয়ে দেওয়ার ফলে যাত্রীদের উদ্বেগ কমেছে। একই সঙ্গে, সরাসরি অ্যাপে অভিযোগ করার প্রয়োজন কমে আসছে।

Advertisement

কী ভাবে হচ্ছে এই কাজ? রেল সূত্রের খবর, সব দূরপাল্লার ট্রেনে রক্ষণাবেক্ষণ বা হাউসকিপিং বিভাগের দায়িত্বে এক জন সুপারভাইজ়ার থাকেন। তিনি কন্ট্রোল রুম ছাড়াও বিভিন্ন কামরার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করেন। এ ছাড়া, প্রতি বাতানুকূল কামরা পিছু এক জন কর্মী এবং স্লিপারের ক্ষেত্রে তিনটি কামরা পিছু এক জন কর্মী থাকেন। বাতানুকূল কামরার কর্মীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকে যাত্রীদের তোয়ালে, কম্বল, বালিশ পৌঁছে দেওয়া এবং যাত্রা শেষে তা তুলে রাখার। সারা দিনে দু’ভাগে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১০টা এবং বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কর্মীদের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হয়। ওই সময়ে যাত্রীদের শৌচালয় ব্যবহার ছাড়াও, খাওয়ার নানা পর্ব থাকে। এর বাইরে বাকি সময়ে যাত্রীদের কেউ বিশেষ অনুরোধ করলে সেই সমস্যা মেটান তাঁরা। নির্দিষ্ট সময় পর পর সুপারভাইজ়ারকে শৌচালয় ছাড়াও কোচের বিভিন্ন অংশের ছবি আপলোড করতে হয়। যা খতিয়ে দেখা হয় রেলের তরফে।

শিয়ালদহ ডিভিশনের রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ছাড়াও নির্দিষ্ট সময় অন্তর যাত্রীদের ফোন করে পরিষেবা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। কামরায় থাকা কর্মীদের বলা হয়, যাত্রীদের দিয়ে ফিডব্যাক ফর্ম পূরণ করাতে। রেল সূত্রের খবর, ওই ব্যবস্থাপনায় সমস্যা অনেকটাই কমে এসেছে। যাত্রীরা সরাসরি অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাওয়ায় এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ধোঁয়াশা কেটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন