শাহজাহান শেখ। — ফাইল চিত্র।
শুধু সন্দেশখালি নয়, গোটা উত্তর ২৪ পরগনাতেই প্রভাব ছিল তাঁর। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দাবি, তাদের কাছে দেওয়া বয়ানে এ কথা নিজেই স্বীকার করেছেন শাহজাহান শেখ। নিজের প্রভাবের কথা বলতে গিয়ে শাহাজাহান এ-ও দাবি করেছেন যে, গত বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত ভোটে জেলার অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে তিনি প্রার্থী থেকে পদাধিকারীদের নাম মনোনয়ন করেছিলেন।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহজাহানকে নিয়ে বক্তব্য লিখিত আকারে তারা জমা দিয়েছে আদালতে। তিনি জেরায় কী কী জানিয়েছেন, তা-ও রয়েছে নথিতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, ১১ এপ্রিল শাহজাহান জেরায় যে বয়ান দিয়েছেন, তাতেই সন্দেশখালি তথা উত্তর ২৪ পরগনায় নিজের প্রভাবের কথা জানিয়েছেন। জেলার অন্যান্য পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি সন্দেশখালির প্রার্থী এবং পদাধিকারী কে হবেন, তা-ও তিনিই ঠিক করতেন।
ইডি জানিয়েছে, জেরায় শাহজাহান তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, সন্দেশখালি এলাকায় তিনিই শেষ কথা। সেখানে তাঁর কথাতেই সব কাজ হয়। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন শাহজাহানই। এমনকি, তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও সন্দেশখালির বিষয়ে তাঁর কথাই শুনে চলতেন বলে জানিয়েছেন দল থেকে ছ’ বছরের জন্য সাসপেন্ড হওয়া এই নেতা। ইডির আরও দাবি, সন্দেশখালির বিধায়ক থেকে শুরু করে স্থানীয় সাংসদ, কে কোন পদে দাঁড়াবেন এবং নির্বাচিত হবেন, সব তিনিই ঠিক করে দিতেন। এ সব তাদের জানিয়েছেন শাহজাহানই।
অন্য দিকে, ইডি হেফাজতে থাকাকালীন শাহজাহানকে জেরা করে আরও সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলেও আদালতের কাগজে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শাহজাহানের নামে গেস্ট হাউস-সহ একাধিক সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে, যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
শাহজাহান আইনজীবী মারফত আদালতে পাল্টা দাবি করেছেন, ইডি হেফাজতে তাঁকে দিয়ে জোর করে বয়ান লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বয়ান না দিলে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে মিথ্যা মাদক এবং মহিলা পাচার মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও ইডি ভয় দেখিয়েছে বলে দাবি শাহজাহানের। সেই কারণেই তিনি ইডিকে বয়ান দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ওই বয়ান প্রত্যাহারও করতে চেয়েছেন সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা। আদালতে শাহজাহানের আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী।