ইডি দফতরে কালীঘাট ফুটবল ক্লাবের কর্তা বাবলু কোলে। -নিজস্ব চিত্র
এত দিন মূলত সারদা তদন্ত নিয়েই ব্যস্ত ছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এ বার রোজ ভ্যালি নিয়েও জোরদার তদন্তে নামল তারা।
রোজ ভ্যালির কাছে কিছু নথিপত্র তলব করেছিল ইডি। সেই মতো মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে গিয়ে রোজ ভ্যালির পক্ষ থেকে বেশ কিছু নথি জমা দিয়ে আসা হয়েছে। রোজ ভ্যালি কর্তৃপক্ষ বলেছেন, “তদন্তে সহযোগিতার জন্য যা যা চাওয়া হয়েছে, তা-ই দিয়ে আসা হচ্ছে ইডি অফিসারদের হাতে। এখনও পর্যন্ত জমা দেওয়া তথ্য নিয়ে ইডি-র তরফে কোনও প্রশ্ন করা হয়নি।”
সারদা-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের খোঁজ পেতে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সারদা ছাড়া অন্য যে সব অর্থলগ্নি সংস্থা মানুষের কাছ থেকে বহু টাকা তুলেছে, তদন্ত করতে হবে তাদের বিরুদ্ধেও। ওড়িশায় এ রকম বেশ কয়েকটি সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সমান্তরাল তদন্ত চালাচ্ছে ইডিও।
ইডি সূত্রে খবর, চলতি বছরের মে মাস নাগাদ রোজ ভ্যালির কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল তারা। ২১ মে কলকাতায় রোজ ভ্যালির দফতরে হানাও দেয় ইডি। সে দিন বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু তার পর থেকে সারদা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ইডি অফিসারেরা। কী ভাবে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি বাজার থেকে টাকা তুলছিল, সেই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অনুমতি তাদের ছিল কি না তা জানতে এই মাসেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক অফিসারকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। সারদার পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে রোজ ভ্যালি নিয়েও জানতে চাওয়া হবে। সূত্রটি জানান, আমানতকারীদের কাছ থেকে সারদা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা তুলেছিল। কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি টাকা তুলেছিল রোজ ভ্যালি। তাদের অফিসে হানা দিয়ে কয়েক হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন ইডি অফিসারেরা। তাঁদের অভিযোগ, সারদার মতোই এই অর্থলগ্নি সংস্থা নানা ধরনের প্রকল্প নিয়ে ব্যবসায় নেমেছে। মানুষকে আশাতীত মুনাফার আশ্বাস দিয়ে তারা বাজার থেকে টাকা তুলেছে।
ইডি-র সন্দেহ, রোজ ভ্যালির সঙ্গেও সমাজের নানা প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত রয়েছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ওই সংস্থার কাছ থেকেও সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তাঁরা। রোজ ভ্যালির কাগজপত্র ঘেঁটে ওই সব প্রভাবশালীদের কাছেও তাঁরা পৌঁছতে চাইছেন বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।