তাপস রায়। —ফেসবুক।
তিনি রাজনীতি না করলে তাঁর বাড়িতে এ ভাবে হানা দিত না ইডি। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর এমনই মন্তব্য করলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তিনি বলেন, ‘‘ইডি যে কারণে আসে, সেই কারণেই এসেছিল। আমি রাজনীতিতে না থাকলে হয়তো এ ভাবে আসত না।’’
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার কিছু ক্ষণ পর তাপসের বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িতে ঢুকেছিল ইডির দল। সন্ধ্যা ৬টা ২০ নাগাদ তাঁরা তাপসের বাড়ি থেকে তাঁরা বেরিয়ে যান। তাপস জানিয়েছেন, তাঁর একটি মোবাইল ফোন এবং কিছু কাগজপত্র কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছেন। কী কাগজ? তাপস বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে অনেকেই অনেক কিছু অনুরোধ করেন। সেই সব কাগজই নিয়ে গিয়েছেন।’’
তল্লাশি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস বলেন, ‘‘রাজনৈতিক জীবনে কখনও দুর্নীতির সঙ্গে ছিলাম না। আজও নেই। আমায় পুরনো, নতুন সব সাংবাদিকেরা চেনেন। আপনারা কিছু দিন অপেক্ষা করুন। চাইলে তদন্তমূলক সাংবাদিকতা করেও আপনারা বার করতে পারেন।’’ তাপস অবশ্য একবারও সরাসরি বলেননি যে তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযান ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’। এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বিধানসভায় তৃণমূলের উপমুখ্যসচেতক বলেন, ‘‘আমি সেটা নিজে মুখে বললে মনে হবে সবার মতো বলছি। এটা আমি বলব না। যা বলার দল বলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন।’’
ইডি তল্লাশি চলাকালীন বাড়িতে তাপসের স্ত্রী ও মেয়েও ছিলেন। তাপস জানিয়েছেন, ইডি আধিকারিকেরা স্ত্রী, মেয়েকে যা জিজ্ঞাসা করেছেন, তাঁরা জবাব দিয়েছেন। তবে তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য, এই দীর্ঘ সময়ের অনেকটাই প্রক্রিয়া সারতে চলে গিয়েছে। তাপস বলেন, ‘‘ওদের নানা প্রসেস করতেই অনেক সময় লেগেছ। সত্যিই সময় লাগে।’’
তাপস বরানগরের বিধায়ক। সেই বরানগর পুরসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিককে ইডি ইতিমধ্যেই জেরা করেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাপস জানিয়েছেন, তিনি অপর্ণাকে চেনেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বরাহনগরের বিধায়ক। উনি আমার আগে থেকে ওখানে চেয়ারম্যান। আমি যদি বলি দলের সাংসদ, বিধায়ক, চেয়ারম্যান, মেয়র, মেয়র পারিষদ, চেয়ারম্যানদের চিনি না, তবে ভিন্ন শুনতে লাগবে।’’ তবে জেরা শেষে তাপস বলেন, ‘‘খারাপ লাগছে শুধু আমার স্ত্রীর জন্য।’’