ED

Partha Chatterjee: প্রশ্নের মুখে পার্থের মেয়ে-জামাইও! ইমেল করে দু’জনকে কলকাতা ডেকে পাঠাল ইডি

এ বার স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ও প্রাথমিক টেট দুর্নীতির মামলায় ডাক পড়ল সোহিনী-কল্যাণময়ের। তাঁদের অবিলম্বে দেখা করতে বলেছে ইডি।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ০৭:৪১
Share:

ফাইল চিত্র।

দিন বারো আগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর মধ্যে তাঁর আমেরিকাবাসী মেয়ে সোহিনী ভট্টাচার্য ও জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য-সহ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের প্রসঙ্গ উঠলেও তাঁদের নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য হয়নি। এ বার স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ও প্রাথমিক টেট দুর্নীতির মামলায় ডাক পড়ল সোহিনী-কল্যাণময়ের। বৃহস্পতিবার পার্থ এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে। আমেরিকায় এ দিনই ই-মেল করে পার্থের মেয়ে-জামাইকে অবিলম্বে কলকাতায় এসে দেখা করতে বলেছে ইডি। এই তলবের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সোহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে বার বার। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও কোনও জবাব দেননি।

Advertisement

ইডি-র তদন্তকারীদের দাবি, কোটি কোটি টাকায় সরকারি চাকরি বিক্রি করে সেই অর্থ বিভিন্ন সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে পার্থ-অর্পিতার যোগসূত্র ‘ক্রিস্টাল ক্লিয়ার’ বা ‘স্ফটিকের মতন স্বচ্ছ’। পার্থের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা কম্পিউটারের সিপিইউ, অর্পিতার ফ্ল্যাটে পাওয়া কুড়িটি মোবাইল থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে বেআইনি নিয়োগ, উদ্ধার করা টাকার উৎস ও প্রভাবশালী যোগের বহু তথ্য মিলেছে বলে তদন্তকারী অফিসারদের দাবি। সেই তদন্তে এ বার পার্থের মেয়ে-জামাইও আতশ কাচের নীচে।

তদন্তকারীদের দাবি, অর্পিতা ও পার্থের পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে আরও একটি সংস্থার হদিস পাওয়া গিয়েছে। ‘অনন্ত টেক্সফেব প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থার ঠিকানা হিসেবে অর্পিতার বেলঘরিয়ার একটি ফ্ল্যাটের ঠিকানা নথিভুক্ত রয়েছে। সেখান থেকে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের কথায়, কোনও সংস্থার ঠিকানা থেকে টাকা-সোনা উদ্ধার হলে তার দায় সেই সংস্থার ডিরেক্টরদের উপরেও বর্তায়। অনন্ত টেক্সফেবের নামেও অনেক জায়গায় জমি-বাড়ি কেনা হয়েছে। ইডি-র দাবি, এমন সংস্থার যোগসূত্রে সোহিনী-কল্যাণময়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কল্যাণময়ের একাধিক আত্মীয়ের বিষয়সম্পত্তির ব্যাপারেও খোঁজখবর করা হচ্ছে।

Advertisement

আজ, শুক্রবার পার্থ ও অর্পিতাকে আবার আদালতে তুলবে ইডি। তদন্তকারীদের অভিযোগ, এই দু’জন দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়োগ দুর্নীতির লুটের টাকায় বিভিন্ন সংস্থা খুলেছেন, সম্পত্তি কিনেছেন এবং নানা ভাবে এখানে-সেখানে টাকা পাচার করেছেন। যে-এজেন্টের মাধ্যমে পার্থকে ‘নমিনি’ করে অর্পিতার নামে ৩১টি জীবন বিমা করা হয়েছে, তাঁরও খোঁজ চালাচ্ছে ইডি। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার জীবন বিমার মধ্যে এমন কিছু সার্টিফিকেট পাওয়া গিয়েছে, যা এককালীন প্রিমিয়াম দিয়ে কেনা। তদন্তকারীদের অনুমান, নগদ টাকায় ওই সব বিমা করানো হয়েছে। ওই সব পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে জীবন বিমা সংস্থাকেও চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, জীবন বিমায় লগ্নি করলে টাকার উৎসের প্রামাণ্য নথি দিতে হয় না। শুধু প্যান কার্ডের প্রতিলিপি লাগে। লুটের টাকা ঘুরপথে জীবন বিমায় লগ্নি হয়েছে বলে ইডি-র অভিযোগ।

নগদ ২৮ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা এবং চার কোটি ৩১ লক্ষ টাকার সোনা পাওয়া গিয়েছে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে। অর্পিতার বক্তব্য, ওই সব গয়নায় তাঁর কোনও অধিকার ছিল না। এমনকি ওই গয়নায় তিনি কোনও দিন হাতও দেননি। তদন্তকারীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, গত ১০ বছরে অর্পিতার নানা রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠান ও সমাজমাধ্যমের ছবি সংগ্রহ করে বাজেয়াপ্ত করা গয়নার সঙ্গে তাঁরা তা ইতিমধ্যে মিলিয়ে দেখেছেন। ওই সব গয়নার মধ্যে হালকা ওজনের কিছু গয়না অর্পিতা যে ব্যবহার করতেন, একাধিক ছবিতে তা স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement