Kripamay Ghosh

নজরে কৃপাময়, বিজয়

তৃণমূল সূত্রের খবর, দেহরক্ষী সেহগাল হোসেন ও হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি ছাড়া আর যে কয়েক জন অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ছিলেন, তাঁদের অন্যতম কৃপাময়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৯
Share:

কৃপাময় ঘোষ।

তিনি অনুব্রত মণ্ডলের এতটাই ‘ঘনিষ্ঠ’ যে, পুলিশি ঘেরাটোপ এড়িয়ে তাঁর কাছে পৌঁছে যেতে পারেন। শক্তিগড়ে প্রাতরাশ সারার সময় অনুব্রতের সঙ্গে খেতে যাঁকে দেখা গিয়েছিল, বোলপুরের বাসিন্দা সেই তৃণমূলকর্মী কৃপাময় ঘোষকেও দিল্লিতে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবার অবশ্য তাঁকে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে দেখা যায়নি। একাধিক বার চেষ্টা করেও কৃপাময়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, এই কৃপাময়ের উপরে কতটা ‘কৃপা দৃষ্টি’ দিতেন অনুব্রত?

তৃণমূল সূত্রের খবর, দেহরক্ষী সেহগাল হোসেন ও হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি ছাড়া আর যে কয়েক জন অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ছিলেন, তাঁদের অন্যতম কৃপাময়। বোলপুরের নিচু বাঁধগোড়া এলাকায় বাড়ি কৃপাময়ের। বোলপুর কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি অনুব্রতের ‘নজরে’ আসেন বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। পরে কৃপাময় মৎস্য দফতরে চাকরি পান। এ ছাড়াও তাঁর পৈতৃক গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। গত কয়েক বছরে সেই ব্যবসা ও কৃপাময়ের নিজের ‘ফুলেফেঁপে ওঠা’ নিয়েও এলাকায় চর্চা ছিল। ইডি সূত্রের দাবি, তাঁর একাধিক চার চাকা গাড়ি, দামি ফোন, বেশ কিছু জমি জায়গাও রয়েছে বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ইডি সূত্রে দাবি, অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসা করে গরু পাচারের টাকা কী কী ভাবে ব্যবহার হত, তা খুঁজে বের করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। যে কৃপাময় এত সহজে হেফাজতে থাকা অনুব্রতের সঙ্গে পুলিশের ঘেরাটোপ ভেদ করে গিয়ে কথা বলে আসতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলেই মনে করছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রের দাবি, শুধু কৃপাময়ই নন, সে দিন অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করা আর এক জন, তুফান মির্ধার কাছ থেকেও তথ্য মিলতে পারে। তাই দু’জনকেই তলব করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিল ইডি।

সেই সূত্রেই কৃপাময়কে তলব, অনুমান তৃণমূলের অনেকের। ইডি সূত্রের অভিযোগ, নামে-বেনামে অনুব্রতের বেশ কিছু সম্পত্তি কৃপাময় দেখভাল করতেন। তার মধ্যে কিছু অ্যাকাউন্টও ছিল বলে দাবি করছে তদন্তকারীদের একাংশ। অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে সেহগাল হোসেনের সঙ্গেও কৃপাময়ের যথেষ্ট ওঠাবসা ছিল বলে সূত্রের দাবি। তাই কৃপাময়কে জেরা করলে পাচার চক্রের বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে দাবি ইডি সূত্রের।

কৃপাময়ের সঙ্গেই অনুব্রতের বাড়ির পরিচারক তথা লাভপুর কলেজের অস্থায়ী কর্মী বিজয় রজককেও ইডি দিল্লিতে তলব করেছে বলে সূত্রের দাবি। বোলপুর হাটতলা এলাকার বাসিন্দা বিজয়ও অনুব্রতের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বলে পরিচিত। এর আগে তাঁকে সিবিআই নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল। অনুব্রতের বাড়ির পরিচারকদের অ্যাকাউন্টে নানা সময় বহু টাকার লেনদেন হয়েছে বলে দাবি ইডি সূত্রের। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, বিজয়ের একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। সেই সূত্রেই তাঁকে তলব করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। বিজয় এ দিন বলেন, ‘‘আমি কোনও সমন পাইনি। আমি দাদার বাড়িতে সর্বক্ষণ থাকতামও না। সমন পেলে অবশ্যই তদন্তেসহযোগিতা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন