স্বাগত: রয়েছেন রাজ্যপাল, শিক্ষামন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র-কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, শুক্রবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবারই শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন জেলার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) খগেন্দ্রনাথ রায়।
বৃহস্পতিবার ওই রিপোর্টে জেলা পরিদর্শক জানিয়েছেন, হুগলি ও বর্ধমানে ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করে একই প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। হুগলিতে ১৫ নভেম্বর থেকে ও বর্ধমানে ২০ নভেম্বর থেকে উচ্চমাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। একই প্রশ্নপত্র হওয়ার ফলে হুগলিতে হওয়া প্রশ্নেই বর্ধমান শহর-সহ লাগোয়া এলাকার স্কুলগুলিতে টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্ট দেওয়ার আগেই, তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠের কয়েক জন ই-মেল করে বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনেন। বৃহস্পতিবার তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। জেলাশাসককেও চিঠি দিয়েছিলেন তাঁরা। জেলাশাসকের নির্দেশে ডিআই তদন্ত করে শিক্ষা কমিশনের কাছে চিঠি পাঠান।
শুক্রবার সমাবর্তনে এসে এ বিষয়েই প্রতিক্রিয়া জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। এটা যদিও বোর্ডের বিষয় নয়, তবুও যে সব স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে এবং যাঁরা এমনটা করেছেন, সেই সব স্বার্থাণ্বেষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাই বলেছেন।”
এ দিন সংস্কৃত লোকমঞ্চে সমাবর্তন উৎসবে ‘ডি-লিট’ দেওয়া হয় সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্ল, প্রাবন্ধিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়কে। অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ডি-লিট নিতে বর্ধমানে আসতে পারেননি। তাঁর বাড়ি গিয়ে ওই সম্মান প্রদান করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান। ডিএসসি দেওয়া হয় বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সমীর ভট্টাচার্য ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমলাক্ষ নাগকে।
উপাচার্য নিমাই সাহা বলেন, “আমরা গবেষণাগারগুলিকে আধুনিক করেছি। খেলার মাঠকেও সাজিয়ে তুলছি।’’ শিক্ষামন্ত্রীও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী ভবন তৈরি, তারামণ্ডলের সংস্কার, ১৬৭ বছরের পুরনো ‘লহর’-এর সংস্কারের কাজ করা হয়েছে করা হয়েছে। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সরকার সবসময় আছে। আমাদের নতুন সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় উপকৃত হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “সবাই যাতে শিক্ষার চৌহদ্দির মধ্যে আসতে পারেন, সেটা আমাদের সবাইকে নজরে রাখতে হবে।” এ দিন ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কৃতীদের হাতে স্বর্ণপদক, পিএইচডি ও এমফিল-এর শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। তিন বছরে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ২৪৯ জন ও পিএইচডি-র শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে ৩৭৯ জনকে।