পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তখন কিছু বিষয়কে ঘিরে প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝামেলা বারবার শিরোনামে আসছিল। প্রেসিডেন্সি আর যাদবপুরে কেন এত গোলমাল, প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। যাদবপুরে কলা বিভাগের প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত রাখার জেরে পড়ুয়াদের ধর্না চলতে থাকায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ বার বললেন, ‘‘নিরানব্বইটি জায়গা ভাল। এই একটি জায়গা খারাপ। ছাত্রেরা অবুঝ হতেই পারে। কিন্তু যাদবপুরে পড়ুয়াদের বোঝানোর কেউ নেই।’’
গত বছর যাদবপুরে ইংরেজি, তুলনামূলক সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শনে প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল। এ বার বাংলা, ইতিহাস-সহ কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে ভর্তি-পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েও কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত রেখেছেন। তার প্রতিবাদে সোমবার থেকে ধর্না চালাচ্ছেন পড়ুয়ারা। আটকে পড়েন উপাচার্য-সহ কর্মসমিতির সদস্যেরা। মঙ্গলবারেও ধর্না চলে। উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ডিনেরা কোনও কাজ করেননি। প্রতিষ্ঠানের এই অচলাবস্থায় তিনি যে যারপরনাই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ, সেটা স্পষ্ট করে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘ওরা নিজেরা বুঝুক! ওরা পড়াশোনা ছাড়া সব কিছুই করে।’’
মন্ত্রীর মন্তব্য শুনে কলা বিভাগের এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ বলেন, ‘‘৯৯টা কলেজে টিএমসিপি-র ছাত্র সংসদ। সেখানে আসন কেনাবেচা হয়। যাদবপুরে হয় না। যাদবপুরকে তাই শিক্ষামন্ত্রীর এত খারাপ লাগে!’’
আরও পড়ুন: চার্টার্ড বিমানে বঙ্গসফরে অমিত
উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানান, পরীক্ষা স্থগিত থাকলেও ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে ক্লাস যাতে ঠিক সময়ে শুরু হয়, তাঁরা সেই চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘‘আইনজ্ঞের পরামর্শ আমাদের কাছে পৌঁছেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার (আজ) বেলা ১২টায় কর্মসমিতি বৈঠকে বসবে।’’ দেবরাজ জানান, ভর্তি-পরীক্ষা নিয়ে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকলে কর্তৃপক্ষ সমাধান করে জানান। কর্মসমিতির বৈঠকে কী হয়, তা দেখা যাক। তত ক্ষণ পর্যন্ত ধর্না চলবে।
যাদবপুরে কলা বিভাগের কয়েকটি বিষয়ে ভর্তি-পরীক্ষা নিয়ে গত বছরেই প্রশ্ন তুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। গত জুলাইয়েও যাদবপুরের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে কিছু বিষয়ে ভর্তির পরীক্ষা নেওয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। নভেম্বরে জানিয়ে দেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কলা বিভাগের সব বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নিতে হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ভর্তির নিয়ম হবে একটাই। কিছু বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি আর কিছু ক্ষেত্রে প্রবেশিকা— এটা চলতে পারে না।
ভর্তি-পরীক্ষার কী বিষয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছে শিক্ষক সমিতি (জুটা)।