শাসক দলের ছাত্র সংগঠনে খেয়োখেয়ি এমনই যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিতেও নিজেরা ছাত্র সংসদ গড়ে তুলতে হিমশিম খাচ্ছে। এই অবস্থায় সেখানে ছাত্র সংসদ গঠনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হল তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই।
দলীয় সূত্রের খবর, টিএমসিপি-র সঙ্গে রবিবার এক বৈঠকে পার্থবাবু জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পদাধিকারীদের তালিকা তিনি ছাত্র নেতানেত্রীদের দেবেন না। তাঁর দূত গিয়ে সেটা উপাচার্য আশুতোষ ঘোষকে দিয়ে আসবেন। শিক্ষা শিবিরের ব্যাখ্যা, পার্থবাবুর এই সিদ্ধান্ত থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট। সেটা হল, টিএমসিপি-র নেতানেত্রীরা দলের ভরসার যোগ্যই হয়ে উঠতে পারছেন না। তাঁদের মধ্যে আকচা-আকচি এমনই তীব্র যে, তা সামলাতে আসরে নামতে হচ্ছে পার্থবাবুর মতো ওজনদার নেতা তথা মন্ত্রীকে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি জিতলেও দুই গোষ্ঠীর বিবাদে এখনও পদাধিকারীর তালিকা চূড়ান্ত করা যায়নি। টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর অনেক দিনের দাবি ছিল, মণিশঙ্কর মণ্ডলকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক করা হোক। অন্য দিকে ওই পদে টিএমসিপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রের পছন্দ আব্দুল কায়ুম মোল্লা। বিবাদ মেটাতে টিএমসিপি-র ওই দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে এর আগে তিন বার বৈঠক করেছেন পার্থবাবু। এ দিন চতুর্থ বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকুন ছাত্রীরা। বুধবার চূড়ান্ত বৈঠকে বসে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঠিক করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
টিএমসিপি সূত্রের খবর, জয়া-গোষ্ঠীর লগ্নজিতা চক্রবর্তী ও রুমানা আখতার এবং অশোক-গোষ্ঠীর সায়নী সরকারের নাম এই লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছে। জয়া এবং অশোকের মন রাখতে মণিশঙ্কর এবং কায়ুমকে যথাক্রমে রাজ্য টিএমসিপি-র সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হবে। রবিবার ফোনে বারবার চেষ্টা করেও অবশ্য এই বিষয়ে পার্থবাবুর বক্তব্য জানা যায়নি।