বিজেপি না মন্ত্রিত্ব, মুকুল এখন উভয় সঙ্কটে

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্বের কৌশল, দলের ভিতরে রেখেই মুকুলকে যতটা সম্ভব নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। সম্প্রতি মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভায় আসার পর সবং বিধানসভা কেন্দ্রটি খালি হয়েছে। পুজোর পর সেখানে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। দলীয় সূত্রের খবর, মুকুলকে বলা হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়ে সবং-এ দাঁড়াতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

মুকুল রায়।— ফাইল চিত্র।

যেতে পারেন, কিন্তু কী ভাবে যাবেন! আর গেলেও একা যাবেন, না কি অনেককে সঙ্গে নিয়ে যাবেন?

Advertisement

তৃণমূলের সংসারে কান পাতলেই এই গুঞ্জন। দলীয় নেতৃত্বের অভিযোগ— বিজেপির ‘সঙ্গদোষে’ দুষ্ট তিনি, অর্থাৎ মুকুল রায়। তৃণমূলের একটি বড় অংশের সন্দেহ, অমিত শাহকে তিনি কথা দিয়েছিলেন তৃণমূলের বেশ কিছু সাংসদ-বিধায়ককে নিয়েই তৃণমূল ছাড়বেন। রাজনৈতিক সূত্র বলছে, এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি
নির্বাচনে কিছু ক্রসভোট করানোর দাবিই সার। বাংলায় এখনও এমন এক জন নেতাও নেই, যিনি তৃণমূল ছেড়ে মুকুলের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেবেন। প্রকাশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করার মতো কোনও নেতাকেও এখনও খুঁজে পাননি মুকুল। অথচ একা যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনও সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি বিজেপি শিবির থেকে। বিজেপি নেতৃত্ব এ ব্যাপারে এখনও ‘ভাবনাচিন্তা করছেন’। আপাতত তাই দু’নৌকায় পা দিয়ে চলা ছাড়া গতি নেই মুকুলের।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্বের কৌশল, দলের ভিতরে রেখেই মুকুলকে যতটা সম্ভব নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। সম্প্রতি মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভায় আসার পর সবং বিধানসভা কেন্দ্রটি খালি হয়েছে। পুজোর পর সেখানে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। দলীয় সূত্রের খবর, মুকুলকে বলা হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়ে সবং-এ দাঁড়াতে। জিতে এলে তাঁকে মন্ত্রী করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: হার একা লড়ে, আত্মঘাতী সুপ্রিয়া

বাংলার বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এটা অবশ্যই মমতার একটি কৌশলী চাল। মুকুলের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতার আঁচ পেয়ে তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে এই পদক্ষেপ করছেন। ৯ অগস্ট তৃণমূলের ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ অনুষ্ঠানে মুকুল রায়কে পাশে বসিয়ে বক্তৃতা করিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে বিজেপির কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত সবুজ সংকেত না মেলায় মুকুল নিজেও রামমোহন মঞ্চে সমান্তরাল অনুষ্ঠানে না গিয়ে মমতার মঞ্চে বসেছিলেন সে দিন।

মার্চে মুকুল রায়ের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সূত্রের খবর, তার আগেই তাঁকে বিধানসভায় দাঁড় করিয়ে তৃণমূলের জাতীয় রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে তৃণমূলে। পাশাপাশি মুকুল ভালই জানেন, তিনি বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করে তৃণমূলের মন্ত্রী হলে কেন্দ্র আরও বিপদে ফেলতে পারে তাঁকে। সারদা এবং নারদ কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডি হাত
গুটিয়ে বসে নেই। এখন নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত একের পর এক তৃণমূল নেতাকে তলব করছে ইডি। রাজ্যসভার এথিকস কমিটিতে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে আনা নারদ কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে বিজেপি নরম মনোভাব দেখিয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিজেপি সূত্রেরই বক্তব্য, মুকুল তাঁর প্রতিশ্রুতি না-রাখতে পারলে রাজনীতির চাকা উল্টো দিকে গড়াতেই পারে।

তাই সব মিলিয়ে এখন উভয় সঙ্কটেই মুকুল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement