সরকারি সভায় ভোট-প্রচার,বিতর্কে শুভেন্দু

খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে কাজের খতিয়ান দেওয়ায় ভরসা রাখছেন, সেখানে সরকারি মঞ্চ ব্যবহার করে ভোট-প্রচারের বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা,

তপন: শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৮
Share:

তপনে সরকারি অনুষ্ঠানমঞ্চে সাংসদ শুেভন্দু অধিকারী। -নিজস্ব চিত্র

খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে কাজের খতিয়ান দেওয়ায় ভরসা রাখছেন, সেখানে সরকারি মঞ্চ ব্যবহার করে ভোট-প্রচারের বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের বাঘইট মাঠে মঙ্গলবার সরকারি সভার শুরুতে বক্তৃতায় তমলুকের সাংসদ শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সাংসদ হিসেবে বলতে চাই, মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের জোয়ার এনেছেন পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। সেই উন্নয়ন হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরেও।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন: ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে ছ’টি ( জেলার) আসনেই মুখ্যমন্ত্রীকে জিতিয়ে দেওয়া উচিত দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর।’’ তবে তাঁর পরেই বলতে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘এটা রাজনৈতিক সভা নয়। সরকারি সভা। প্রতি জেলায় ডিএম থেকে বিডিওদের নিয়ে আমি সভা করি।’’

ততক্ষণে অবশ্য বিতর্কের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। জেলার পাঁচ বিধায়ক তৃণমূলের। একমাত্র কুশমণ্ডি আসনটি বামেদের দখলে রয়েছে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওঁরা ভোটের রাজনীতি করতে এসেছেন। সরকারি সভায় দাঁড়িয়ে ভোট-প্রচারের মতো অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড ‘মমতা কালচার’-এ পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে জানিয়ে জানতে চাইব, এ ভাবে সরকারি সভায় রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা যায় কি না।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের কটাক্ষ, ‘‘বিধানসভা ভোটে জেলার সব আসনে হারতে হবে বুঝেই সাংসদ শুভেন্দুকে সরকারি মঞ্চ প্রচারের কাজে ব্যবহার করতে হয়েছে।’’

Advertisement

এ দিন দুপুর সওয়া একটা
নাগাদ গোয়ালপোখর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হেলিকপ্টারে চেপে তপনের সভামঞ্চে পৌঁছন শুভেন্দু। বক্তব্যের গোড়ায় বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চাশ বার তিনি দার্জিলিঙে গিয়েছেন। বলেছেন, গোর্খাল্যান্ড হবে না। পঞ্চাশ বারের বেশি জঙ্গলমহলে গিয়েছেন। অশান্তি থেমে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এক সময় বামফ্রন্টের কমল গুহ বলেছিলেন, মহাকরণ করতে হবে উত্তরবঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা করে দিয়েছেন।’’ গোটা রাজ্যে উন্নয়নের নানা ফিরিস্তি সাংসদ দিচ্ছিলেন এ ভাবেই। আচমকাই আসে ভোট-প্রসঙ্গ।

শুভেন্দু অবশ্য পরেও দাবি করেছেন, রাজনীতির কথা বলেননি। তাঁর কথায়, ‘‘বলেছি, ওই জেলার ছ’টা আসন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে হবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে। আমি কোনও পার্টির কথা বলিনি। তৃণমূলের নাম উচ্চারণ করিনি। জনগণকে এটা বলতেই পারি! এতে রাজনীতির কী আছে!’’

বিরোধীরা সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সরকারি সভায় পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের সাংসদ শুভেন্দুর আমন্ত্রণ পাওয়ার মধ্যেও রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন তাঁরা। কেন আমন্ত্রিত শুভেন্দু? সরাসরি জবাব না দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘যা বলার, সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলতে পারবেন।’’ সভায় হাজির বালুরঘাটের তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা বলেন, ‘‘শুভেন্দু পাশের জেলার (মালদহের) পর্যবেক্ষক। তা ছাড়া, সাংসদ হিসেবেও সভায় এসে বক্তব্য রাখতেই পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন