গঙ্গাকে বাঁচাতে ভরসা আদালত

কোথাও গঙ্গার বুকে যন্ত্র নামিয়ে অবাধে বালি তোলা হচ্ছে। কোথাও আবার দখল হয়ে গিয়েছে গঙ্গার পাড়। নানা শহরের নিকাশি নালার নোংরা জলও এসে মিশছে গঙ্গায়। হাওড়া থেকে কল্যাণী পর্যন্ত গঙ্গার অবস্থা ভয়াবহ।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৭
Share:

গঙ্গা-দখল: এ ভাবেই পড়ছে বোল্ডার। উত্তরপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর দে।

কোথাও গঙ্গার বুকে যন্ত্র নামিয়ে অবাধে বালি তোলা হচ্ছে। কোথাও আবার দখল হয়ে গিয়েছে গঙ্গার পাড়। নানা শহরের নিকাশি নালার নোংরা জলও এসে মিশছে গঙ্গায়। হাওড়া থেকে কল্যাণী পর্যন্ত গঙ্গার অবস্থা ভয়াবহ। গঙ্গা বাঁচাতে জাতীয় পরিবেশ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যের কিছু পরিবেশবিদ।

Advertisement

গঙ্গা দূষণ রোধ এবং যাবতীয় বেনিয়মে নজরদারি চালাতে ২০০৫-এ কলকাতা হাইকোর্ট গড়ে দিয়েছিল ‘গঙ্গা দূষণ নিয়ন্ত্রক কমিটি’। কিন্তু ২০০৭ সালে কমিটি ভেঙে যায়। তার পরে নজরদারির অভাবে এই ১০ বছরে গঙ্গা দূষণ বেলাগাম হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। পরিবেশবিদদের আক্ষেপ, গঙ্গা বাঁচাতে পুরসভাগুলি সচেতন নয়। নানা শহরের নিকাশি নালা গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। ফলে, দূষিত জল অবাধে নদীতে মিশছে। মিশছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্যও।

বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে আরও। যেমন, উত্তরপাড়ায় ইটভাটার জমিতে একটি আবাসন বানাতে প্রোমোটাররা বোল্ডার ফেলে গঙ্গা পাড়ের বেশ কয়েক ফুট বুজিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। মাসখানেক আগে কল্যাণীর ঈশ্বরগুপ্ত সেতু বসে যাওয়ার পিছনে অবাধে বালি তোলাকে দুষছেন অনেক পরিবেশবিদ। কয়েক বছর আগে চন্দননগরে গঙ্গা লাগোয়া একটি বহুতল হঠাৎ বসে যেতে শুরু করে। ভিতের নীচ থেকে মাটি সরে বড় গর্ত হয়ে যায়। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় চন্দননগরে একটি পরিবেশ সংস্থা চালান। তিনিই সংস্থার আরও কয়েক জনকে নিয়ে গঙ্গা দূষণ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করে জাতীয় পরিবেশ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘এখানে গঙ্গা থেকে বালি তোলার কারও অনুমতি নেই। আগে উত্তরপাড়া আর শ্রীরামপুরে তোলা হতো। এখন বন্ধ। বেআইনি নির্মাণ সেচ দফতর এবং পোর্ট ট্রাস্টের দেখার কথা। এই সব বন্ধে কেউ সাহায্য চাইলে নিশ্চয় করব।’’ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রের দাবি, ‘‘গঙ্গায় যাবতীয় বেনিয়ম পোর্ট ট্রাস্টেরই দেখার কথা।’’ পোর্ট ট্রাস্টের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন, পুরসভা এবং সেচ দফতরেরই পুরো বিষয়টি দেখার কথা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন