প্রতি বছর মাধ্যমিক পাশের পরে রাজ্যের অনেক ছাত্রছাত্রীকেই উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়। এই সমস্যার সুরাহার রাস্তা দেখাল কলকাতা হাইকোর্ট। তারা জানিয়ে দিল, কোনও পড়ুয়া পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও স্কুলে পড়াশোনা করে মাধ্যমিক পাশ করলে সেই স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে তাকে পড়ার সুযোগ দিতেই হবে। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেন বিচারপতি শেখর ববি শরাফ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর, সুখদেব মণ্ডল নামে এক ছাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার থানা এলাকার মথুরাপুর আর্য বিদ্যাপীঠে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। চলতি বছরে সে ২১৪ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে ওই স্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চেয়ে আবেদন জানায়। কিন্তু স্কুল-কর্তৃপক্ষ তার আবেদন মঞ্জুর করেননি। তাই তার বাবা পাঁচুগোপাল মণ্ডল অক্টোবরে হাইকোর্টে মামলা করেন।
পাঁচুবাবুর আইনজীবী সুনীতকুমার রায় জানান, মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, ২১৪ নম্বরের চেয়ে কম নম্বর পাওয়া ছাত্র ওই স্কুলে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, মাধ্যমিকে ২২৫ নম্বর না-পেলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া যাবে না। বক্তব্য জানিয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে হলফনামা পেশ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন তাঁদের হলফনামা জমা পড়েনি।
বিচারপতি শরাফ এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী শান্তনু মিত্রের কাছে জানতে চান, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার জন্য মাধ্যমিকে ন্যূনতম নম্বরের কোনও নিয়মবিধি আছে কি? ওই আইনজীবী জানান, পর্ষদের এমন কোনও নিয়ম নেই।
বিচারপতি তার পরেই জানান, ওই ছাত্র ওই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ না-পেলে তাকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে। সংবিধান শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার বলে চিহ্নিত করেছে। সেই অধিকার খর্ব করা যায় না।
আবেদনকারীর আইনজীবী সুনীতবাবু জানান, বিচারপতি শরাফ এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, মথুরাপুর আর্য বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের মধ্যে সুখদেবকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে এবং উচ্চ মাধ্যমিক সংসদে তার রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।