উপাচার্য হওয়ার বড় জ্বালা!
বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক এবং সহ-পরীক্ষা নিয়ামক সাসপেন্ড হয়ে আছেন। মার্কশিট জালের চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের জেরা করছে সিআইডি। এরই মধ্যে মার্কশিট ও শংসাপত্র নিয়ে অভিযোগ আসছে স্রোতের মতো। সুরাহা করার দায়িত্ব চেপেছে উপাচার্যের কাঁধে। অভিযোগ ঝাড়াইবাছাই করছেন তিনিই।
বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই দেখা যাবে, মার্কশিট অথবা সার্টিফিকেট যাচাই করাতে ভিড় জমে গিয়েছে। যাচাইয়ের জন্য আগে যেতে হতো পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরেই। কিন্তু ওই দফতরের কর্তারা এখন সাসপেন্ড হয়ে সিআইডি-র জেরার মুখোমুখি। তাই সকলেই যাচ্ছেন উপাচার্য বাসব চৌধুরীর দফতরে। উপাচার্য বুধবার জানান, তিনি নিজেই প্রতিটি মার্কশিট ও সার্টিফিকেট যাচাই করছেন। এমনকী এই যাচাইয়ের কাজটা করতে হচ্ছে বাড়িতে নিয়ে গিয়েও। সহকারী হিসেবে এক আধিকারিককে নিয়েছেন তিনি। ‘‘আমার কাছে আসা অভিযোগের যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করছি,’’ বললেন বাসববাবু।
ওই রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম ২০০৮ সালে। এর মধ্যেই তাকে ঘিরে মার্কশিট ও সার্টিফিকেট জাল করার চক্র গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। শুধু এই রাজ্যে নয়, সেই চক্রের ডালপালা ছড়িয়েছিল ভিন্ রাজ্যেও। উপাচার্য জানান, ওড়িশা থেকে এই ধরনের অজস্র অভিযোগ এসেছে তাঁদের কাছে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, বাধ্য হয়েই ওড়িশার খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকৃত অবস্থা জানাতে হয়েছে তাঁদের। আর কেউ যাতে প্রতারিত না-হন, সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া মার্কশিট বা শংসাপত্র দেখে সন্দেহ জাগলে যে-কেউ সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-সব অভিযোগ এসেছে বা আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার আদৌ কোনও পরীক্ষা না-দিয়ে মার্কশিট পেয়ে গিয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে।
২০১৫ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব নেন বাসববাবু। তিনি জানান, গত দু’বছরে বিএ, বিএসসি, বিকম পাঠ্যক্রমের প্রায় দেড় হাজার মার্কশিট ও শংসাপত্র সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রোজই অভিযোগ আসছে। তাই রাতদিন এক করে সেই সংশোধনের কাজ করে চলেছেন উপাচার্য।