পুলিশ নিগ্রহ, ধৃত মঞ্জুলপুত্র শান্তনু ঠাকুর

গত ১৯ মার্চ ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া ধর্ম মহামেলা চলাকালীন হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির থেকে একটি সোনার হার চুরি যায়। পরের দিন মেলার আহ্বায়ক ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ থানায় অভিযোগ জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০২:১৬
Share:

ধৃত: পুলিশের সঙ্গে শান্তনু। নিজস্ব চিত্র

একটি চুরির ঘটনার তদন্তে গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ি থেকে দু’জনকে আটক করে আনতে গিয়ে শুক্রবার রাতে নিগৃহীত হল পুলিশ। সেই নিগ্রহে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনু এবং তপনকিরণ মজুমদার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দাকে। আর এই ঘটনায় ফের সামনে এসে পড়ল ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক কোন্দল।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ঠাকুরবাড়ি থেকেই ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশকে শারীরিক নিগ্রহ এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের শনিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের ২ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ মার্চ ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া ধর্ম মহামেলা চলাকালীন হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির থেকে একটি সোনার হার চুরি যায়। পরের দিন মেলার আহ্বায়ক ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ থানায় অভিযোগ জানান। তদন্তে নেমে পুলিশ ঠাকুরবাড়ি থেকে অমিত মোহন্ত সরকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। ধৃতকে জেরা করে ও ঠাকুরবাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আরও দু’জনকে শনাক্ত করা হয়।

Advertisement

শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ রামকৃষ্ণ গুড়িয়া নামে গাইঘাটা থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর দুই যুবকের খোঁজে ঠাকুরবাড়িতে যান। তাঁদের আটক করে গাড়িতে তুলতে গিয়েই বিপত্তি হয়। অভিযোগ, সে সময়ই শান্তনু ও তপনকিরণ পুলিশকে বাধা দেন। শান্তনু পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। শান্তনু এবং কিছু লোকজনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। খবর পেয়ে ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় পুলিশ নিয়ে ঠাকুরবাড়ি পৌঁছন। অভিযোগ, তাঁকেও নিগ্রহ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শান্তনু ও তাঁর লোকজন আটক এক যুবককে সরিয়ে দেন। কোনও রকমে একজনকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপরেই গ্রেফতার করা হয় শান্তনু ও তপনকে। ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে দেখে মঞ্জুলবাবুও গাড়িতে উঠে পড়েন। রাতে স্থানীয় চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে বাবা-ছেলের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়।

শান্তনুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চক্রান্তের স্বীকার। পুলিশকে নিগ্রহ বা তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া হয়নি। আমি শুধু পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কেন দু’জনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ গোটা ঘটনার জন্য শান্তনু এবং মঞ্জুলবাবু দায়ী করেছেন বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরকে। মঞ্জুলের বৌদি হলেন মমতা। মঞ্জুল বলেন, ‘‘বৌদি পুলিশ দিয়ে এ সব করাচ্ছেন। ঠাকুরবাড়িতে কার জন্য গোলমাল হচ্ছে, তা সবাই জানেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে সাংসদের দাবি, ‘‘শুক্রবার রাতেই আমি দিল্লি থেকে ফিরেছি। ঘটনার সময় ছিলাম না। পরে শুনেছি। পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন