Vidyasagar College Vandalization

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর ফেসবুকে হাজার হাজার ‘প্রাক্তন ছাত্র’

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ‘সোনার কেল্লা’র এই সংলাপই মনে পড়তে বাধ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০৩:২২
Share:

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে এই মিম। নিজস্ব চিত্র

‘হাজার হাজার ডক্টর হাজরা’!

Advertisement

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ‘সোনার কেল্লা’র এই সংলাপই মনে পড়তে বাধ্য। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ ছেয়ে গিয়েছে ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’য়। অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মূর্তি ভাঙার পর রাতারাতি ওই কলেজের শয়ে শয়ে ছাত্র তৈরি করে ফেলেছে বিজেপির আইটি সেল। সেই ছাত্রদের নাম আলাদা, রূপ আলাদা, তবে বয়ান হুবহু এক। সকলেই ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে ‘‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র...’’ লিখে তাঁদের বক্তব্য শুরু করছেন। বাক্যগঠন তো বটেই, মায় যতিচিহ্ন অবধি এক!

ফেসবুকে এখন ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ লিখে সার্চ করলেই ভেসে উঠছে সে সব বয়ান। সব ক’টিতেই দাবি করা হয়েছে পুরো ঘটনা সামনে থেকে দেখেই ওই পোস্ট লেখা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, টিএমসিপি কর্মীরাই মূর্তি ভেঙে মিডিয়াকে ডেকে আনেন। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে প্রথম ওই পোস্ট দেখা যায় বিরাজনারায়ণ রায় নামে এক ব্যক্তির প্রোফাইলে। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র, আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কিন্তু আমার গর্বের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে আজ টিএমসিপি যে জঘন্য রাজনীতি করল, তা লজ্জার। থাকি বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে, তাই পুরো ঘটনাটি সামনে থেকে দেখেছি...।’’ ওই পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হতেই তিনি নিজের প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন। কিন্তু যাঁরা তার আগেই বিরাজের প্রোফাইল দেখেছিলেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, তিনি বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র। বাড়ি কোচবিহারে। বিজেপির প্রচারক।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিরাজ ফেসবুক থেকে উধাও হয়ে গেলেও তাঁর বাণীটি রেখে যান সমাজমাধ্যমে। অল্প ক্ষণেই তা ছড়িয়ে পড়ে। দেখা যায়, সঞ্জীব গুহ, প্রণব চৌধুরী, পার্থপ্রতিম রায় চৌধুরী— এ রকম আরও অনেক ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁরা সকলেই ‘থাকেন’ বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে। সকলের বয়ান এক। বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি সেল-এর প্রধান অমিত মালবীয় সেই লিখনই পোস্ট করেন। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি ও রকম কোনও ফেসবুক পোস্ট বা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখিনি। সত্য না মিথ্যা, তা এ নিয়ে তদন্ত হলে বোঝা যাবে।’’

ভুয়ো খবর-বিশেষজ্ঞ প্রতীক সিন্‌হা বিষয়টি নজর করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ফার্স্ট পার্সন অ্যাকাউন্ট বা কারও জবানিতে কিছু লিখলে সব সময়েই বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়। ‘আমি দেখেছি’ বললে লোকে বেশি বিশ্বাস করে। তাই হিসেব করেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু একাধিক নাম থেকে একই বয়ান আসার পরে এই ‘কৌশল’ নেটিজেনদের চোখে ধরা পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে পাল্টা কটাক্ষও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement