তৃণমূলের মতো সাসপেনশনের পালা সিপিএমেও! অদ্ভুত অভিযোগে সিপিএমের রাজ্য কমিটি থেকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হল প্রাক্তন সর্বভারতীয় যুব নেতা তাপস সিংহকে! দলীয় মুখপত্রে তাঁর সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধের বেশ কিছু বক্তব্যের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদগোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কিছু বক্তব্যের মিল পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছিল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। সেই ‘অনৈতিক কাজে’র দায়েই তাপসবাবুকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর।
রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে জবাবি ভাষণে বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘দুঃখজনক’ হলেও তাঁকে এই শাস্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে হচ্ছে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর অন্দরের ব্যাখ্যা, কোনও ভাবে লেখার সত্বাধিকার আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলা হলে দলের তরফে যাতে একটা রক্ষাকবচ খাড়া করা যায়, তার জন্যই তাপসবাবুকে সাসপেন্ড করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হল। সিপিএমে এমন অভিযোগে শাস্তির সিদ্ধান্ত সাম্প্রতিক কালে বিরল! দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘পচা শামুকে পা কাটল তাপসের!’’
দলীয় অনুশাসন মেনে তাপসবাবু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে দলের রাজ্য কমিটির অন্দরে এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তাপসবাবু সম্প্রতি দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের ভূমিকা নিয়ে আলিমুদ্দিনের কাছে অনুযোগ জানিয়েছিলেন বলে সিপিএম সূত্রের খবর। তারই ফল তাঁকে পেতে হল বলে দলের একটি বড় অংশেরই ধারণা। সমুদ্রে নৌকাডুবিতে সিরিয়ান শিশু আয়লান কুর্দির মৃত্যুর পরে শরণার্থী সমস্যা নিয়ে দলের দৈনিক মুখপত্রে একটি নিবন্ধ লেখেন তাপসবাবু। দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, ইন্টারনেটে কোথা থেকে তাপসবাবু তথ্য সহায়তা নিয়েছিলেন, তা নিয়ে দলের অন্দরে সক্রিয় হয়েছিলেন এক রাজ্য নেতাই। তাঁর পাশে দাঁড়ান রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য। আইনি পথ বাঁচাতেই শেষ পর্যন্ত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কিন্তু দলের এক রাজ্য নেতারই প্রশ্ন, ‘‘এই যুক্তিতে দেখলে তো দলীয় মুখপত্রের আন্তর্জাতিক পাতাটাই তুলে দিতে হয়!’’