টোম্যাটো ছাড়া বাঙালির রান্না অসম্পূর্ণ। মূলত শীতের সব্জি হলেও এখন আর অসময়ের টোম্যাটো দুর্লভ নয়। শীতের আগে পুজোর মরসুমে বাজারে ওঠা তাজা টোম্যাটোর দাম থাকে প্রায় দ্বিগুণ। এই আশ্বিনে টোম্যাটো বাজারে আনতে আষাঢ় থেকেই বীজ বুনে ভরা শ্রাবণে রোয়া করতে হবে। তবে সাদা মাছি বাহিত পাতা কোঁকড়ানো ‘কুটে’ ভাইরাস রোগ আর্দ্র মরসুমে আজও চাষিদের ভাল করে টোম্যাটো চাষ করতে দেয় না। তাই কুটে রোগ সহনশীল সঠিক হাইব্রিড জাত বাছা খুব জরুরি। নানা কোম্পানির হাজারো হাইব্রিডের ভিড়ে দিশেহারা না হয়ে ‘হরাইজন্টাল রেজিস্ট্যান্স’যুক্ত হাইব্রিড জাত বেছে নিতে হবে। কিছু দিন আগের সহনশীল হাইব্রিডগুলিতে আজ আর সেই ধার নেই। তাছাড়া দেশি টোম্যাটোর মতো চ্যাপ্টা আকার আর বোঁটার দিকে সবুজ আভা যাতে থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
বীজতলার মাটিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ গ্রাম নিমের দানা ও ৫০ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা গোবর সারের সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। বৃষ্টির জল আটকাতে বাঁশের বাখারি দিয়ে পলিশিটে ঢেকে দিন বীজতলা। চারার ১০-১২ ও ২০-২২ দিন বয়সে নিম কীটনাশক ১৫০০০ পিপিএম এক মিলি প্রতি লিটার জলে তরল জৈব সারের সঙ্গে গুলে স্প্রে করতে হবে। বীজতলায় চারার বিশেষ যত্ন নিতে হবে ও পারলে কীট প্রতিরোধী নেটের মধ্যে চারা বড় করতে হবে।
সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে রোয়ার সময়েও। চারা তুলে শিকড়ের মাটি ঝরিয়ে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন। এরপর ইমিডাক্লোপ্রি়ড ১ মিলি প্রতি ৫ লিটার জলের দ্রবণে সঙ্গে হিউমিক অ্যাসিড (এক মিলি প্রতি লিটার) গুলে ১০ মিনিট চুবিয়ে রাখার পর রোয়া করুন। জলনিকাশি যুক্ত জমি একান্ত প্রয়োজন। প্রথম চাপান সারের প্রথাগত মাত্রা অর্ধেক কমিয়ে বিঘায় ১৫/২০ কেজি ক্যালম্যাগস সার দিন। টোম্যাটোর বাঁশের ঠেকানের এক হাত উপরে পাতুন হলুদ আঁঠালো ফাঁদ। বিঘা প্রতি ৪০-৪৫টি।
লেখক মুর্শিদাবাদের সহ-উদ্যানপালন অধিকর্তা।