মুহুর্মুহু বজ্রপাতের কারণ কি মাত্রাছাড়া দূষণ?

মঙ্গলবারও মুহুর্মুহু বজ্রপাত হয়েছে। দুপুরের পর থেকেই শহরের আকাশ অন্ধকার করে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ০২:২৯
Share:

দামিনী: শহরের আকাশ চিরে। মঙ্গলবার, ময়দান এলাকায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

শহরের বাতাসে দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধিই কি বাজ পড়ার ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে? গবেষকদের একাংশের অনুমান, বাতাসে কোনও একটি দূষকের (পলিউট্যান্ট) মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি শহরে ক্রমবর্ধমান বাজ পড়ার ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এ নিয়ে নিশ্চিত হতে গেলে যে তথ্যের প্রয়োজন, তার ঘাটতি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কারণ, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সংগৃহীত তথ্যে ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে বলেই অভিযোগ গবেষকদের একাংশের।

Advertisement

মঙ্গলবারও মুহুর্মুহু বজ্রপাত হয়েছে। দুপুরের পর থেকেই শহরের আকাশ অন্ধকার করে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। গবেষকদের মতে, যদিও দূষণের সঙ্গে বাজ পড়ার ঘটনার সরাসরি কোনও সম্পর্ক স্থাপন করা যায়নি, তবে কলকাতায় যে ভাবে বাজ পড়ার ঘটনা বাড়ছে এবং দূষণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী, তাতে দুইয়ের সম্পর্ক রয়েছে বলেই অনুমান তাঁদের।

বজ্রপাত নিয়ে বছরখানেক ধরে গবেষণা করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যাটমস্ফেরিক সায়েন্স’ বিভাগ। সেই গবেষণায় মূল বাধা দূষণ সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি। গবেষকদের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তা ধারাবাহিক নয়। এ নিয়ে গবেষণা করতে দূষণের খুঁটিনাটি জানা প্রয়োজন। তা হলেই বোঝা সম্ভব, বাতাসে কোনও দূষকের বৃদ্ধির সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাজ পড়ার ঘটনার যোগ রয়েছে কি না।

Advertisement

আরও পড়ুন: বর্ষার শুরুতেই ভোগান্তি শহরে

সংশ্লিষ্ট বিভাগের অধ্যাপক সুব্রতকুমার মিদ্যা বলেন, ‘‘দূষণ ও বাজ পড়ার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, সে পরীক্ষা প্রাথমিক স্তরে। তবে ধুলোর ঝড়ের সময়ে বজ্রপাতের ঘটনা বেড়ে যায়। তাই অনুমান, কোনও একটি দূষকের সঙ্গে বজ্রপাতের নিবিড় যোগ রয়েছে। সেটা ভাসমান অতি সূক্ষ্ণ ধূলিকণা (পিএম ২.৫) না সালফার-ডাই-অক্সাইড নাকি নাইট্রাস অক্সাইড, পুরো তথ্য না পেলে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বায়ুদূষণ নিয়ে যে তথ্য সংগ্রহ করে, তা ধারাবাহিক নয়। ফলে অন্য জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে গবেষণায় অসুবিধা হচ্ছে।’’

যদিও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বক্তব্য, বাজ পড়ে তো বর্ষাকালে। তখন বাতাসে দূষণের পরিমাণও কম থাকে। তা ছাড়া নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের স্টেশনগুলি তথ্য সংগ্রহ করে। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘বাজ পড়ার সংখ্যা বাড়ছে না কি কমছে, সে পরীক্ষা করতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তথ্য সংগ্রহ করে না। সেটা পর্ষদের কাজও নয়। পর্ষদ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই তথ্য সংগ্রহ করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন