প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ে গোলমাল নিয়ে একটি খবরের ‘পেজ’ বন্ধ (ব্লক) করতে ফেসবুককে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে ফেসবুক। আজ, শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। যে পদ্ধতিতে রাজ্য সরকার এই নির্দেশ দিয়েছে তা বৈধ নয় বলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, সাম্প্রতিক গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময়ে একটি ফেসবুক পেজে প্ররোচনামূলক খবর ও ছবি ছড়ানো হচ্ছিল। তাই প্রশাসনিক কর্তারা মনে করেছিলেন, পেজটি বন্ধ করা প্রয়োজন। লালবাজারের সাইবার থানার ওসি ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিষয়টি জানান। আদালত ওই আর্জি গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে বলে, ফেসবুককে এই ‘পেজ’ বন্ধ করতে বলা হোক।
ফেসবুকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তারা সরকার বা আন্দোলনকারী, কোনও পক্ষেই নেই। জনগণকে মতামত প্রকাশের জন্য তারা ‘দেওয়াল’ ব্যবহার করতে দেয়। প্ররোচনামূলক খবর বা ছবি ছ়ড়ানো বন্ধ করতে ফেসবুকের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে। তা না করে সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হওয়াতেই আপত্তি রয়েছে তাদের। ফেসবুকের দাবি, অশান্তি ছড়াতে পারে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এর আগেও অনেক আপত্তিকর ‘পোস্ট’ মুছে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সমস্যায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে। রাজ্য প্রশাসন করেনি।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে দুই জঙ্গি সংগঠনের টানাপড়েন
পদ্ধতিগত খামতির কথা অবশ্য মেনে নিচ্ছেন সরকারি আইনজীবীদের একাংশও। তাঁরা বলছেন, সাইবার সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে এখনও নোডাল অফিসারই নিয়োগ করেনি রাজ্য। তাই ফেসবুকের আপত্তির প্রাথমিক যৌক্তিকতা রয়েছে। কিন্তু তাঁরা এ-ও বলছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং জনগণের নিরাপত্তার কথা ভেবেই ওই পেজ বন্ধ করতে বলা হয়। নোডাল অফিসার না থাকলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতই এ ধরনের আর্জি জানানোর উপযুক্ত জায়গা। স্বরাষ্ট্র দফতরের খবর, বিষয়টির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারও জড়িয়ে গিয়েছে। তাই আজ, শুক্রবার মামলার শুনানিতে হাজির থাকতে পারেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দও।
রাজ্য প্রশাসনের খবর, ফেসবুককে ব্যবহার করে বিভিন্ন গোলমালে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি, সংঘর্ষের ঘটনায় তা আরও জোরালো ভাবে ফুটে উঠেছে। তাই এই মামলাটিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আদালতে কী ভাবে যুক্তির জাল সাজানো হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠকও করেছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল-সহ সরকারের বিশিষ্ট আইনজীবীরা।