—প্রতীকী ছবি।
শিবপুরের জমি-জটের আঁচ পড়ল গীতবিতান মেলাতেও।
বোলপুরের শিবপুর মৌজায় গীতবিতান টাউনশিপে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে গীতবিতান মেলা। বেশ কয়েক বছর ধরে শিবপুরে শিল্প চেয়ে আন্দোলন করছেন জমিদাতাদের একাংশ। মেলার দিন সমস্যার আশঙ্কা পুলিশ-প্রশাসন আগেই করেছিল। ওই জমিতে মেলার বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাবিরগঞ্জ থেকে শিবতলা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন জমিদাতাদের একাংশ। ফলে এ দিন ভাল রকম পুলিশ বন্দোবস্ত রাখা হয়েছিল মেলা প্রাঙ্গণ ও তার বাইরে। পুরো এলাকা মুড়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের পতাকায়।
মেলার উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল দুপুর দুটোয়। তার আগেই অনিচ্ছুক জমিদাতাদের একাংশ স্থানীয় বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী ও মেলার উদ্বোধক চন্দ্রনাথ সিংহকে একাধিক দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু, তাঁরা সাবিরগঞ্জ থেকে বেরিয়ে মূল রাস্তায় আসার তোড়জোড় করতেই পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। প্রতিবাদে ক্ষোভ জানান জমিদাতারা।
জমি অধিগ্রহণ আইনে বাম আমলে শিল্পায়নের জন্য শিবপুর মৌজার ২৯৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। শিল্প অবশ্য হয়নি। ২০০৮ থেকে শিবপুরের কৃষকদের দাবি ছিল, অধিগৃহীত জমিতে হয় শিল্প হোক, না হয় জমি ফেরত দিতে হবে। রাজ্যে পালাবদলের পরে ওই জমিতে গীতবিতান টাউনশিপ এবং বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজ শুরু হয়।
জমিদাতাদের সঙ্গে থাকা সেভ ডেমোক্রেসির রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী এবং কৃষিজীবী সংগ্রামী সংহতি কমিটির সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘২০১৭-র অক্টোবরে কলকাতা হাইকোর্ট নির্মাণ কাজের উপরে স্থগিতাদেশ দেয়। তবু দিনরাত কাজ হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, বিষয়টি জেলাশাসক, এসপি-কে জানানো হবে। বীরভূমের এসপি শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘শিবপুরের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন শীঘ্রই জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলে শুনেছি।’’
স্মারকলিপি দেওয়ায় বাধার অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী চন্দ্রনাথবাবুর মন্তব্য, ‘‘প্রশাসন নোংরামি বরদাস্ত করবে না। ভদ্রভাবে আসুক, আমাদের অসুবিধা নেই। বেশির ভাগ মানুষই আমাদের পাশে আছেন। কিন্তু কিছু নেতা, যাঁরা রাতে চুরি করেন, দিনের বেলায় ঘুমোন, তাঁরা কিছু কৃষককে উসকানি দিচ্ছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এই এলাকার ৬০ একর জমিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেটাও তো শিল্প! ’’