সম্প্রতি ট্রেনে খুনের চেষ্টা করে ছিনতাইয়ের অপরাধে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে রেলের এক কর্মীর। এ বার রেলে চাকরি দেওয়ার নামে বিরাট অঙ্কের টাকা নেওয়ার অভিযোগে আটক হলেন রেলেরই এক কর্মী ও তাঁর এক শাগরেদ।
প্রদীপকুমার পাল ও ফিরোজ নামে ওই দু’জনকে বৃহস্পতিবার প্রথমে আটক করে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জালিয়াতি দমন শাখা। রাতে তাঁদের দেওয়া হয় নারকেলডাঙা থানার হাতে। ফিরোজ শিয়ালদহ রেল অফিসে পিওন।
রেল সূত্রে খবর, জালিয়াতি দমন শাখার কাছে বহু দিন ধরেই অভিযোগ ছিল, বেকারদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তুলছেন কিছু রেলকর্মী। বৃহস্পতিবার অভিযানে গিয়ে গোয়েন্দারা দেখেন, শিয়ালদহের রেল অফিসের বাইরে ১৬ জন চাকরি প্রার্থীকে দিয়ে জাল হাজিরা খাতায় সই করাচ্ছেন প্রদীপ ও ফিরোজ। তাঁদের কাছে মিলেছে ৪২টি নিয়োগপত্র।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জালিয়াতি দমন শাখার ইনস্পেক্টর রোনাল্ড ব্রাগাস জানান, অভিযুক্তেরা স্বীকার করেছেন, গ্রুপ-ডি বিভাগের ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে এক এক জনের থেকে ৬০ হাজার থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করতেন। গত এক বছরে এ ভাবে প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন। রোনাল্ড জানান, ঘটনায় আরও পাঁচ-সাত জন জড়িত। তাদের মধ্যে আছেন কয়েক জন রেলকর্মীও। তাঁদের খোঁজ চলছে।
গত কয়েক বছরে রেলের নিয়োগ পরীক্ষার আগে ভুয়ো প্রশ্ন ফাঁস থেকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠছে। অন্য ঘরে বসিয়ে প্রশ্নের উত্তর বলে দেওয়ার নামেও টাকা হাতিয়েছে জালিয়াতেরা। গত বছর কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে বিধাননগর পুলিশ। কিন্তু রেলকর্মীদের একাংশই এতে যুক্ত থাকায় বিষয়টি রোখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চাকরি প্রার্থীদের সচেতন করতে বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে রেল। তাতেও কমছে না জালিয়াতি। তদন্তকারীদের কথায়, চাকরি প্রার্থীরা আগ বাড়িয়ে টাকা না দিলেই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু তা কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না।