শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে বাঙ্কারে কয়লার জোগান না পাওয়ায় ফরাক্কায় এনটিপিসির ৫০০ মেগাওয়াটের চতুর্থ ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া হল বুধবার। বাকি ৫টি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে কমিয়ে ৬০ শতাংশে নামিয়ে আনা হল। এনটিপিসির অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার (মানব সম্পদ) মিলন কুমার জানান, মঙ্গলবার থেকে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক প্ল্যান্টের বাঙ্কারে কয়লা তোলার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ইউনিটগুলিতে কয়লার জোগান যাচ্ছে না।
এনটিপিসি সূত্রে জানা গিয়েছএ, শ্রমিকদের এ মাস থেকে ইএসআই প্রকল্পে এনে চিকিৎসার সুবিধা দিতে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে শ্রমিকরা একটা নির্দিষ্ট অর্থ জমা দেবেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থা সেই অর্থের তিন গুণ অর্থ জমা দেবে। কিন্তু শ্রমিকেরা এই প্রকল্পে টাকা জমা দিতে রাজি নন। বুধবার স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানের চেষ্টা হয়। কিন্তু কিছু শ্রমিক সমস্ত সংগঠনকেই অমান্য করে নিজেরাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেছেন। ওই শ্রমিকেরা নিজেরাও কাজ করছেন না, ইচ্ছুক শ্রমিকদেরও কাজ করলে মারধরের ভয় দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
মিলন কুমার বলেন, ‘‘বুধবার ১টি ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। এই অবস্থা চললে বৃহস্পতিবারেও ১টি ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া হবে। তিন দিনের মধ্যে অচলাবস্থা না কাটলে ফরাক্কার ৬টি ইউনিটের পুরো প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না। আর সেটা হলে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, সিকিম-সহ সমস্ত রাজ্য বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়বে। ওই রাজ্যগুলিকে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দেওয়াও হয়েছে।’’ ফরাক্কার বিধায়ক কংগ্রেসের মইনুল হক বলেন, ‘‘এ ভাবে অচলাবস্থা সৃষ্টি হোক আমরা তা চাই না। কিছু শ্রমিক সংগঠনগুলিকে অগ্রাহ্য করেই কাজ বন্ধ করাই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই ধরনের আন্দোলনে সায় নেই আমাদের।’’
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা সোমেন পান্ডে বলেন, ‘‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এ ভাবে অচলাবস্থা তৈরি করা ঠিক হয়নি।’’ ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জনসংযোগ আধিকারিক শৈবাল ঘোষ বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ইএসআই প্রতিনিধিরা মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় আসছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনের কাছেও সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে।’’