সাগরে নিম্নচাপ, আশায় চাষিরা

একটা নিম্নচাপের হাত ধরে ক’দিন আগে বর্ষা খানিক গা-ঝাড়া দিয়েছিল। কিন্তু তাতে মাটির তেষ্টা মেটেনি। আপাতত বঙ্গোপসাগরে নির্মীয়মাণ আর একটি নিম্নচাপের আগমনী শুনে আশায় বুক বাঁধছেন দক্ষিণবঙ্গের কৃষকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০৩:০২
Share:

একটা নিম্নচাপের হাত ধরে ক’দিন আগে বর্ষা খানিক গা-ঝাড়া দিয়েছিল। কিন্তু তাতে মাটির তেষ্টা মেটেনি। আপাতত বঙ্গোপসাগরে নির্মীয়মাণ আর একটি নিম্নচাপের আগমনী শুনে আশায় বুক বাঁধছেন দক্ষিণবঙ্গের কৃষকেরা।

Advertisement

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ উপকূলের কাছে একটি নিম্নচাপ দানা বাঁধতে চলেছে। শুক্রবার পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে দক্ষিণবঙ্গে জোরালো বৃষ্টির যথেষ্ট সম্ভাবনা। উপকূলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অগস্টের প্রথম দু’সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গের বর্ষা-ভাগ্য নির্ভর করছে নিম্নচাপটির শক্তি সঞ্চয়ের উপরে।

চলতি মরসুমে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা যাত্রা শুরু করেছে ঘাটতির বোঝা মাথায় নিয়ে। তামাম জুনে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের ৩০% কম। দিল্লির মৌসম ভবনের পূর্বাভাস ছিল, জুলাইয়ে একাধিক নিম্নচাপ এসে ঘাটতিতে রাশ টানবে। জুলাইয়ের গোড়ায় একটা নিম্নচাপের হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা সক্রিয়ও হয়েছিল। থিতু হয়ে বসা মৌসুমি অক্ষরেখার জেরে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি মিলেছে। ফলে জুলাইয়ের শেষে ঘাটতি নেমে দাঁড়িয়েছে ৮%। শুধু তা-ই নয়, ২১ থেকে ২৭ জুলাই এ তল্লাটে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের ২২% বেশি।

Advertisement

তবে সমস্যা অন্যত্র। সর্বত্র সমান বৃষ্টি হয়নি। তাই নানা জেলায় চাষিরা মুশকিলে। কৃষি-আবহবিদদের বক্তব্য: আমন ধানের বীজতলা তৈরির সময় হল জুলাই থেকে অগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত। জুনের ঘাটতির সুবাদে কিছু অঞ্চলে বীজতলা নিয়ে সঙ্কট দেখা দেয়। জুলাইয়ের মোটামুটি স্বাভাবিক বৃষ্টিতে ধীরে ধীরে তা মিটলেও চলতি সপ্তাহে বুধবারের পরে দক্ষিণবঙ্গে তেমন বৃষ্টি হয়নি।

তাই এখন বঙ্গোপসাগরে মাথা তোলা নিম্নচাপটি বড় ভরসা। হাওয়া অফিসের খবর: বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝ়ড় ‘রোয়ানু’র প্রভাবে এ বছর দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার সূচনাপর্ব তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিল। কেরল হয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে মৌসুমি বায়ু সাধারণত পা রাখে ১ জুন। দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছয় ৮ জুন। ‘রোয়ানু’র বাধায় এ বার সে কেরলেই পৌঁছেছে পাক্কা এক সপ্তাহ দেরিতে। দক্ষিণবঙ্গে আসতে আসতে ন’দিন লেট। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) গোকুলচন্দ্র দেবনাথের কথায়, ‘‘এমনিতেই বর্ষা দেরিতে ঢুকেছে। উপরন্তু জুন মাসে সক্রিয় না-হওয়ায় ঘাটতি বেড়ে গিয়েছিল। জুলাই থেকে ঘাটতি মিটতে শুরু করেছে।’’

এমতাবস্থায় আবহবিদদের আশা, বঙ্গোপসাগরে নতুন নিম্নচাপটি ফের এক দফা জোরালো বৃষ্টি দেবে। তার টানে রাঢ়বঙ্গে মৌসুমি অক্ষরেখাও দিন কয়েক থিতু হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement