ছেলেকে কবর দিয়ে বাড়ি ছাড়লেন বাবা

শনিবার নিহত রিয়াজুল এবং হাসান লস্করের দেহ কবরস্থ করার সময়ে গ্রামে ফিরেছিলেন অনেকে। যুব তৃণমূল কর্মী রফিকুলও ছিলেন। পুলিশ মোতায়েন ছিল। কবরে মাটি পড়তেই এলাকা বিলকুল সুনসান। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২১
Share:

বিদায়: রিয়াজুল মোল্লার শেষকৃত্য। —নিজস্ব চিত্র।

ছেলের দেহ কবরস্থ করে চোখের জল মুছতে মুছতে ঘর ছাড়লেন বাবা। জানালেন, পুলিশের ধরপাকড়ের ভয় আছে। গ্রামে ফের হামলা চালাতে পারে দুষ্কৃতীরা, আছে সেই আতঙ্কও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বাসন্তীর হেতালখালি গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে মারা যায় রফিকুল ইসলাম মোল্লার ন’বছরের ছেলে রিয়াজুল। গুলিতে রক্তাক্ত ছেলেকে তুলে ছুটে পালাচ্ছেন স্ত্রী। নিজে এগোতে পারেননি। গুলির ভয়ে তাঁকে আটকান পড়শিরা।

শনিবার নিহত রিয়াজুল এবং হাসান লস্করের দেহ কবরস্থ করার সময়ে গ্রামে ফিরেছিলেন অনেকে। যুব তৃণমূল কর্মী রফিকুলও ছিলেন। পুলিশ মোতায়েন ছিল। কবরে মাটি পড়তেই এলাকা বিলকুল সুনসান।

Advertisement

কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন? রফিকুলের জবাব, ‘‘আমার ছেলেকে যারা খুন করল, পুলিশ এখনও তাদের ধরল না। পুলিশের অত্যাচারের ভয়ে এলাকায় থাকতে পারছি না।’’

আরও পড়ুন: তিন জেলায় আক্রান্ত বিরোধীরা

স্থানীয়দের অভিযোগ, যে তপু মাহাতোর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে, তাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। তপু-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ হয়েছে থানায়। ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ দিন চঞ্চল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সেভ ডেমোক্র্যাসির প্রতিনিধি দল গিয়েছিল নিহতদের বাড়িতে। গ্রামের আরও কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে যান তাঁরা। বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষের সঙ্গেও দেখা করে তপু-সহ প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

বাসন্তীর ঘটনায় বিজেপি নেতা মুকুল রায় বর্ধমানে বলেন, ‘‘এ ভাবে চললে তৃণমূলে গৃহযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। দলটায় কারও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’ জবাবে জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘বড় সংসারে থাকতে গেলে ঠোকাঠুকি হতেই পারে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনও ব্যাপার নয়।’’ মুকুলবাবুকে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘উনি যত দিন তৃণমূলে ছিলেন, সব সুবিধা ভোগ করেছেন। দল ছেড়ে যাওয়ার পরে এখন সবটাই খারাপ দেখছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন