ফাইল চিত্র
নোট বাতিলের জেরে ভুক্তভোগীদের আর্থিক ‘সমর্থন’ দিতে গিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। শুধু শাসক দলের নেতাদের আশীর্বাদে পুলিশের সার্টিফিকেট থাকলেই ৫০ হাজার টাকা কেউ ঘরে নিয়ে চলে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেই!
ভিন্ রাজ্যে অসংগঠিত ক্ষেত্রে যাঁরা নোট বাতিলের ফলে কাজ হারিয়ে রাজ্যে ফিরে এসেছেন, তাঁদের এককালীন ৫০ হাজার টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণা রূপায়ণে শ্রম দফতর চালু করেছে ‘সমর্থন’ প্রকল্প। যেখানে গত ৮ নভেম্বরের পরে অন্য রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। তার জন্য অর্থ ও শ্রম দফতরের প্রয়োজনীয় নির্দেশিকাও জারি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কে কবে কোথা থেকে কাজ হারিয়ে রাজ্যে ফিরে এসেছেন, তা খুঁজে বার করার নির্দিষ্ট মাপকাঠি নির্দেশিকায় নেই। বরং, জেলায় জেলায় যাচাই করার কমিটিতে জেলাশাসকের সঙ্গে আছেন অনুব্রত মণ্ডল, মনিরুল ইসলাম, নির্মল ঘোষ, শিশির অধিকারীর মতো তৃণমূল নেতারা। তার পরে আর পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর্মহারাদের দাবির সত্যতা যাচাই করবে কি না, উঠছে প্রশ্ন। সেই কারণেই জনতার করের টাকা নয়ছয়ের আশঙ্কা করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: মার্চেই গরমের দাপট, কালবৈশাখীর আশায় বাংলা
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, হাওড়া— এই ১০টি জেলাকে ‘পাইলট’ বেছে নিয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে। ৮ নভেম্বরের পরে কাজ হারিয়ে ফিরে আসার প্রমাণ হিসাবে কোনও নথিও জমা দেওয়ার কথা সরকারি ফরমানে অন্তত বলা নেই। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক অবশ্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ‘‘বিডিও এবং স্থানীয় থানা আবেদনের সত্যতা যাচাই করছে। পাড়ার লোকের কাছ থেকেও তাঁরা তথ্য পাচ্ছেন। পুলিশকে কোনও না কোনও নথি দেখিয়ে আবেদনকারীকে নিজের বক্তব্য প্রমাণ করতে হচ্ছে।’’ তবে ব্লকপিছু আড়াই-তিন হাজার আবেদনকারীর খোঁজ পুলিশ কী ভাবে নেবে, তা নিয়ে সন্দিহান প্রশাসনের একাংশই।