Shahjahan Sheikh

ইডি হানার আশঙ্কায় শাহজাহান ছক কষেছিলেন হামলার

সিবিআই সূত্রের দাবি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠির সূত্রে শাহজাহানকে প্রথম তলব করেছিল ইডি।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৭
Share:

শেখ শাহজাহান। — ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশির দিন, ৫ জানুয়ারি, যে দ্রুততার সঙ্গে ইট, লাঠি নিয়ে একদল দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছিল, তার পিছনে পূর্ব পরিকল্পনা রয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের।

Advertisement

এই দাবির পিছনে কিছু যুক্তি তুলে ধরে তদন্তকারীদের বক্তব্য, হামলার পরে ইডির গাড়িতে যে ইট পাওয়া যায়, তার গায়ে লেখা রয়েছে 'এসকেএসটি'। শাহজাহানের ইটভাটার ইট ওই নামেই বিক্রি করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, নিজের ইটভাটা থেকেই প্রায় হাজার পাঁচেক ইট বাড়ির আশেপাশে মজুত রেখেছিলেন শাহজাহান।

তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারির আগেই দলের একটি প্রকাশ্য সভায় নিজের অনুগামী ও সমর্থকদের ইডি ও সিবিআইকে উচিত ‘শিক্ষা’ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে শাসিয়েছিলেন শাহজাহান। ওই সভার ভিডিয়ো ফুটেজ তাঁদের হাতে এসেছে বলেও তদন্তকারীদের দাবি।

Advertisement

সিবিআই সূত্রের দাবি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠির সূত্রে শাহজাহানকে প্রথম তলব করেছিল ইডি। স্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার কারণে জিজ্ঞাসাবাদে মুখোমুখি হতে পারছেন না বলে সে বার আইনজীবী মারফত ইডিকে চিঠি দিয়ে সময় চেয়েছিলেন শাহজাহান। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, তখনই শাহজাহান বুঝে গিয়েছিলেন, যে কোনও দিন তাঁর বাড়িতে হানা দিতে পারে ইডি। সিবিআই সূত্রের দাবি অনুযায়ী, তখনই তিনি হামলার নীল নকশা তৈরি করেন।

তদন্তকারীদের দাবি, শাহজাহানের দুই ভাই সিরাজ ও আলমগির, তাঁর ঘনিষ্ঠ শাগরেদ জিয়াউদ্দিন মোল্লা, ফারুক আকুঞ্জি, দিদার বক্স ও সন্দেশখালি-১ পঞ্চায়েত সমিতির দুই মহিলা সদস্যকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘টিম’। আকুঞ্জি পাড়ায় শাহজাহানের বাড়ির আশেপাশেই ইট, পাথর, লাঠি, কাঠের বাটাম মজুত করে রাখা হয়েছিল। মহিলাদের জমায়েত করার দায়িত্ব ছিল পঞ্চায়েতের মহিলা সদস্যদের। সিবিআই সূত্রের দাবি অনুযায়ী ভাঙচুর এবং হামলায় অনুগামীদের নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন জিয়াউদ্দিন, ফারুক, আলমগির ও সিরাজ। তদন্তকারীদের দাবি, গত ডিসেম্বর থেকেই কার্যত ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থাকছিলেন শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী। কোনও না কোনও সময়ে তল্লাশি হতে পারে, ওই আশঙ্কায় হামলার জন্য মহিলা-পুরুষ, লাঠি, পাথর, ইট প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, "এখনও পর্যন্ত শাহজাহান-সহ ১৪ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ধৃতদের মোবাইলের সিডিআর (কল ডিটেলস রেকর্ড) এবং ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে রেখে শাহজাহান ও তাঁর অনুগামীদের জেরা করা হচ্ছে। তাতেই একের পর এক হামলার ওই প্রস্তুতির তথ্য সামনে আসছে। সে দিনের পরে শাহজাহান প্রায় ৫৫ দিন অজ্ঞাতবাসে ছিলেন। সেই সময়ে তাঁর গতিবিধি কী ছিল, তারও তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন শাহজাহান কোন কোন প্রভাবশালী এবং নিজের কোন কোন ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন, তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন